১০ টাকার ইলিশ মাছের ঘোষণায় গণরোষের মুখে এমপি প্রার্থী

মাত্র ১০ টাকায় ইলিশ! অবিশ্বাস্য এই ঘোষণার চমক নিমেষেই রূপ নিলো জনরোষ আর বিশৃঙ্খলায়। ফরিদপুরের সদরপুরে এক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থীর ভোটের রাজনীতি পরিণত হলো তুলকালাম কাণ্ডে, যেখানে মাছের চেয়ে মানুষের ভিড় ছিল বহুগুণ বেশি। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, বিক্ষুব্ধ জনতা প্রার্থীকে ধাওয়া করে তাঁর গাড়ি আটকে দেয় এবং পুলিশের হস্তক্ষেপে তিনি উদ্ধার পান।
আসন্ন নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন মুফতি রায়হান জামিল। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি সদরপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে "১০ টাকায় ইলিশ বিতরণ" কর্মসূচির আয়োজন করেন।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ মাঠে ভিড় জমায়। কিন্তু আয়োজকদের প্রস্তুতি ছিল চাহিদার তুলনায় একেবারেই নগণ্য। মাছ বিতরণ শুরু হওয়ামাত্রই অপ্রতুল ইলিশ নিয়ে শুরু হয় কাড়াকাড়ি, যা মুহূর্তেই চরম হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কিতে রূপ নেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে প্রার্থী রায়হান জামিল দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। তিনি ভাষণচর ইউনিয়ন পরিষদের দিকে রওনা হওয়ার সময়, মাছ না পেয়ে সকাল থেকে অপেক্ষায় থাকা ক্ষুব্ধ জনতা তাঁর গাড়ি ঘিরে ফেলে এবং আটকে দেয়। এতে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে রায়হান জামিল বলেন, “মানুষের উপকারের উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ ছিল, কিন্তু অপ্রত্যাশিত ভিড় ও বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যায়।”
তবে সদরপুর থানার ওসি সুকদেব রায় জানিয়েছেন, এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন না করার জন্য প্রার্থীকে আগে থেকেই জানানো হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশনা উপেক্ষা করেই বিতরণ শুরু করা হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক রূপ নেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং প্রার্থীকে উদ্ধার করে।
এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষের উপকারের নামে ভোট পাওয়ার এই কৌশল শেষ পর্যন্ত প্রার্থীর জন্য চরম বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
What's Your Reaction?






