কাপ্তাইয়ে ডলুইছড়ি ও শিলছড়ি বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান উদযাপিত

রিপন মারমা, কাপ্তাই প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটিঃ
Nov 1, 2025 - 21:03
 0  10
কাপ্তাইয়ে ডলুইছড়ি ও শিলছড়ি বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান উদযাপিত

রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে ২ নং রাইখালী ইউনিয়নের ডলুইছড়ি ম্রখ্যংওয়া বৌদ্ধ বিহার ও ৫ নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের শিলছড়ি মহাজনপাড়া ক্যক ম্যাক রাদানা বৌদ্ধ বিহারে শনিবার (১ নভেম্বর) শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে।

উভয় বিহারে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল কঠিন চীবর দান। অনুষ্ঠান শুরু হয় ফুলপূজা ও বুদ্ধ পূজার মাধ্যমে। এর পর দেশ, জাতি ও সকল প্রাণীর কল্যাণ কামনায় প্রার্থনা, পঞ্চশীল গ্রহণ, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার, কল্পতরু দান ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিন্ড দানসহ নানাবিধ ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। সন্ধ্যায় হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফানুস উত্তোলনের মাধ্যমে দিনটি চূড়ান্ত হয়।

ডলুইছড়ি ম্রখ্যংওয়া বৌদ্ধ বিহারে বিহারাধ্যক্ষ তিষা মহাথেরোর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত পামোক্ষা মহাথেরো। বিশেষ অতিথি ছিলেন বান্দরবান উজানী পাড়া রাজগুরু মহাবৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত সুবন্নলঙ্কার মহাথেরো। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন এলাকা থেকে পূর্ণাথীরা ও কমিটির সদস্যরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

অন্যদিকে, শিলছড়ি মহাজনপাড়া ক্যক ম্যাক রাদানা বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান উদযাপন হয় বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত চিংডিটা মহাথেরোর সভাপতিত্বে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াপাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত উঃপুঞাওয়াসা মহাথেরো। ধর্ম দেশক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারের নন্দ বংশ ভান্তে। স্থানীয় কার্বারি পাইমং মারমাসহ শতাধিক ভিক্ষু এবং অসংখ্য বৌদ্ধ ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষ অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন।

ডলুইছড়ি ম্রখ্যংওয়া বৌদ্ধ বিহারাধ্যক্ষ তিষা মহাথেরো বলেন, “শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানটি এলাকার ঐতিহ্য ও ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ। আয়োজনের শৃঙ্খলা, ঐক্য ও শান্তির পরিবেশ প্রশংসনীয়। আমি আয়োজক কমিটি, দায়ক-দায়িকা এবং সকল ভক্তকে ধন্যবাদ জানাই। এই চীবর দান যেন সকল প্রাণীর মঙ্গল ও শান্তির বার্তা বয়ে আনে।”

শিলছড়ি মহাজনপাড়া ক্যক ম্যাক রাদানা বৌদ্ধ বিহারের সাধারণ সম্পাদক তপন মারমা জানান, “আষাঢ়ী পূর্ণিমার পর থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তিন মাসব্যাপী বর্ষাব্রত পালিত হয়। প্রবারণা পূর্ণিমার পর কঠিন চীবর দান উৎসব শুরু হয়েছে এবং চলবে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত।”

উক্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় পুণ্য অর্জনের পাশাপাশি সর্বোচ্চ দানের মাধ্যমে সৎকর্মে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow