যে কাঁধে থাকার কথা আদরের চুম্বন, সে কাঁধেই এখন অসুস্থ সন্তানের দুঃসহ ভার

গ্রামের মেঠোপথ ধরে হেঁটে চলেছেন এক মা। তার কাঁধে ৮ বছরের সন্তান ইয়ামিন, কিন্তু এ কোন আদরের বোঝা নয়, এ যেন নিয়তির চাপিয়ে দেওয়া এক জীবন্ত অভিশাপ। সন্তানের অস্বাভাবিক স্ফীত মাথাটি মায়ের কাঁধে এমনভাবে চেপে বসেছে, যেন পুরো পৃথিবীর যন্ত্রণা এসে ভর করেছে তার ওপর। এটি কোনো সাধারণ মা-ছেলের পথচলা নয়; এটি এক জীবন্মৃত শৈশবকে বাঁচানোর জন্য এক মায়ের করুণ আর্তনাদ, যা আজ ঘুরছে মানুষের বিবেকের দরজায় দরজায়।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বাউশখালী গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক বাগান শেখের ঘরে জন্ম নেওয়া ইয়ামিনের বয়স যখন মাত্র দুই মাস, তখনই তার মাথায় জমতে শুরু করে মৃত্যুর শীতল জল। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম হাইড্রোসেফালাস। সময়ের সাথে সাথে সেই জল জমে জমে ইয়ামিনের মাথাটি এখন তার ছোট্ট শরীরের জন্য এক দুঃসহ বোঝা।
চিকিৎসকেরা আশার আলো দেখিয়েছেন। তারা বলেছেন, একটি সফল অপারেশনেই ইয়ামিনের মাথা থেকে এই অভিশপ্ত পানি বের করে দেওয়া সম্ভব। ফিরে আসতে পারে এক শিশুর স্বাভাবিক জীবন, তার মুখে ফুটতে পারে নির্মল হাসি। কিন্তু সেই আশার আলোর সামনে দুর্ভেদ্য প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছে তিন লক্ষ টাকা!
আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে মা আমেনা বেগম ভেঙে পড়েন, "ডাক্তাররা কয়, পোলা আমার ভালো হইয়া যাইব। কিন্তু আমরা যে নুন আনতে পান্তা ফুরাই। যেখানে দুই বেলা ভাতের ঠিক নাই, সেখানে এত টাকা তো স্বপ্ন দেখারও সাহস করি না। পোলাকে ছাড়া সাহায্য চাইলে কেউ বিশ্বাস করে না, তাই এই কলিজার টুকরাকে নিয়েই পথে নামছি। ওর কষ্ট দেখলে যদি কারও দয়া হয়!"
হতভাগ্য বাবা বাগান শেখের গায়ের ঘাম আর রক্ত পানি করা পরিশ্রমও এই বিপুল অর্থের কাছে হার মেনেছে। দুই বোন আর বাবা-মায়ের চোখের সামনে একটু একটু করে নিস্তেজ হয়ে পড়ছে ইয়ামিন। যে বয়সে তার দুরন্তপনায় মেতে থাকার কথা, খেলার মাঠে ছুটে বেড়ানোর কথা, সেই বয়সে সে লড়ছে এক অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে।
এই সংবাদ শুধু একটি পরিবারের গল্প নয়, এটি আমাদের সমাজের মানবিকতার প্রতি এক কঠিন প্রশ্ন। ইয়ামিনের এই যন্ত্রণার শেষ কোথায়? তার শৈশব কি টাকার অংকে হারিয়ে যাবে? আজ আপনার সামান্য সহানুভূতিই পারে ইয়ামিনের স্ফীত মাথা থেকে যন্ত্রণার জল সরিয়ে দিয়ে সেখানে এঁকে দিতে একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক শৈশবের আলপনা।
আসুন, এই অসহায় শিশুটির পাশে দাঁড়াই। ইয়ামিনের জীবন বাঁচাতে যোগাযোগ করুন:
মিজানুর রহমান
মোবাইল: ০১৮৩২১১৯৬৭৭
What's Your Reaction?






