মিটফোর্ড হত্যা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায় কিছু দল — রুহুল কবির রিজভী

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে আলোচিত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর উত্তরায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “মিটফোর্ডে যা ঘটেছে, তা হৃদয়বিদারক। কিন্তু সেই ঘটনাকে রাজনৈতিক রঙ দিয়ে কিছু দল ফায়দা লুটতে চাইছে। অথচ এটি একটি ব্যক্তিগত বিরোধ ও ব্যবসায়িক সংঘর্ষের ফল।” তিনি স্পষ্ট করেন, “ঘটনায় জড়িতদের কেউ যদি বিএনপির নাম ব্যবহার করে থাকেন, তাও দলের পরিচয়ে নয়; কারণ এটি দলের আদর্শগত বা সাংগঠনিক কোনো বিরোধ ছিল না।”
তিনি আরও জানান, “ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কেউ জড়িত থাকলে তাদের কোনো ছাড় নেই। যাদের নাম পাওয়া গেছে, তাদেরকে গতকাল (১১ জুলাই) রাতেই দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।”
পাবনার সুজানগরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “সেই রাতেই জড়িতদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। দল কোনো অপকর্ম বা সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেয় না।” তিনি বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সব সময় দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে।”
রিজভী অভিযোগ করেন, “কয়েকটি রাজনৈতিক দল মিছিল-মিটিং করে বিএনপিকে ঘায়েল করতে চায়। অথচ শেখ হাসিনার শাসনামলে এমন বহু ঘটনায় অপরাধীরা বিচারহীন থেকেছে।” তিনি প্রশ্ন রাখেন, “আমরা যদি চুপ থাকতাম, ব্যবস্থা না নিতাম, তাহলে আপনারা কথা বলার সুযোগ পেতেন। কিন্তু আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি। তারপরও এত চিৎকার কেন?”
তিনি বলেন, “একটি রাজনৈতিক দলের অতীতে কীভাবে ছাত্রদের পায়ের রগ কাটা হয়েছে, কীভাবে বাস থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে—সেসব মানুষ এখনো ভুলে যায়নি। যারা আজ মিছিল করে বিএনপিকে দোষারোপ করছে, তাদের অতীত আরও ভয়াবহ।”
রিজভী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “মানুষ হত্যা, সহিংসতায় যারা জড়িত, তারা মাটির নিচে থাকলেও খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে—এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ সাহস না পায়।”
তিনি বলেন, “বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক পরিবার। সেখানে হয়তো ভুল করে কেউ অনুপ্রবেশ করতেই পারে। তবে তাদের চিহ্নিত করে দল থেকে আলাদা করাই আমাদের দায়িত্ব। আমরা সেটা করে চলেছি।”
What's Your Reaction?






