রাঙ্গামাটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

রিপন মারমা, কাপ্তাই প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটিঃ
Jun 14, 2025 - 18:38
 0  3
রাঙ্গামাটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ধারার সংগ্রামী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে রাঙ্গামাটিতে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও কেক কাটা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি নির্মল বড়ুয়া মিলন। অনুষ্ঠানে পার্টির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও স্বৈরাচার বিরোধী এবং গণঅভ্যুত্থানপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন।

এই অনুষ্ঠানে ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশ রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. ওমর ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমাম হোসেন, খেলাফত মজলিশ রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. সামশুল আলম, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সদস্য সচিব ওয়াহিদুজ্জামান রোমান এবং রাঙ্গামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার নেতা শ্যামল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ মো. আবুল হাশেম, অমর চাকমা, এমিলী চৌধুরী, মেকি চাকমা, চম্পা চাকমা, অরুণজিতা চাকমা, নার্গিস আক্তার, রোপনা চাকমা, বিলকিস বেগমসহ ভূমিহীন সংহতির নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পার্টির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জুঁই চাকমা।

উল্লেখযোগ্য যে, ২০০৪ সালে তৎকালীন ওয়ার্কার্স পার্টির সুবিধাবাদী নেতৃত্বকে প্রত্যাখ্যান করে পলিটব্যুরোর সদস্য সাইফুল হকের নেতৃত্বে পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ মিলে নতুন দল হিসেবে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি গঠন করেন। ২০০৮ সালে দলটি নির্বাচন কমিশন থেকে কোদাল মার্কায় নিবন্ধন লাভ করে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়।

২০১৪ সালে দলটি সেই নির্বাচন বর্জন করলেও ২০১৮ সালে আবারও কোদাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। বাম প্রগতিশীল ধারার আরও পাঁচটি দলও একসাথে কোদাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। জনগণের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এগিয়ে নিতে দলটি ২০০৭ সালে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা ও ২০১৮ সালে বাম গণতান্ত্রিক জোট গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।

২০২২ সালে গঠিত গণতন্ত্র মঞ্চেও দলটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একই বছর থেকে ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ৩১ দফা দাবিতে যুগপৎ ধারায় গড়ে ওঠা গণআন্দোলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সক্রিয় অংশ নেয়। গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র, শ্রমিক, জনতার গণঅভ্যুত্থানে পার্টির নেতাকর্মীরা সাহসী ভূমিকা পালন করেন, যেখানে বদিউজ্জামাল ও আবদুল লতিফ শহীদ হন এবং শতাধিক কর্মী আহত হন।

বিগত ২০ বছরে তেল-গ্যাস-সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলন, শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুর আন্দোলন, নারী অধিকার, সাংস্কৃতিক আন্দোলন, নাগরিক আন্দোলনসহ জনগণের প্রতিটি ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

জনজীবনের প্রতিটি সমস্যা ও সংকটে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, চুরি, দুর্নীতি, অর্থপাচার, রাজনৈতিক দমন-পীড়নের বিরুদ্ধেও দলটি শুরু থেকেই বলিষ্ঠ অবস্থান নিয়ে এসেছে। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন, ২০১৮ সালের ভোট ডাকাতি ও ২০২৪ সালের তথাকথিত নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে দলটি জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয় থেকেছে।

পার্টির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলটির সাধারণ সম্পাদক জননেতা সাইফুল হক এক বিবৃতিতে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “দেশ ও জনগণের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার থেকে আমরা আগামী দিনেও আপোষহীন সংগ্রামে নিজেদের নিয়োজিত রাখব।” তিনি দেশের প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তির সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow