পুলিশের লাঠিচার্জেও সরেনি ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা

রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় পাঁচ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলনের ফলে নতুনবাজার-গুলশান-বনশ্রী সংযোগ সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েন অফিসগামী ও সাধারণ মানুষ।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের কয়েকজন সহপাঠীকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা এসব বহিষ্কারাদেশ অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহারের দাবি জানান। একইসঙ্গে বহিষ্কৃতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তদন্তের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনার দাবি তোলেন। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি 'সংস্কার কমিশন' গঠন এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিও রয়েছে তাদের পাঁচ দফার মধ্যে।
অবরোধের কারণে রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এ সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। কোনো উপায় না পেয়ে কর্মস্থলগামী ও গন্তব্যে যেতে চাওয়া যাত্রীরা যানবাহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটে চলাচল শুরু করেন। এতে অনেককে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এক ভুক্তভোগী যাত্রী জানান, বাড্ডা থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পারিবারিক জরুরি কাজে উত্তরা যাচ্ছিলেন। কিন্তু অবরোধে আটকে পড়ে তাকে বাসায় ফিরে যেতে হয়। আরেকজন যাত্রী বলেন, “সব কিছু বন্ধ, গাড়ি চলছে না। এখন গরমের মধ্যে হেঁটে হেঁটে যেতে হচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা সাধারণ মানুষের কষ্টটা বোঝেন না।”
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরাতে চেষ্টা চালায় পুলিশ। সকালে তারা লাঠিচার্জ করে কিছু শিক্ষার্থীকে সরিয়ে দেয়। তবে কিছু সময় পর ওই শিক্ষার্থীরা আবারও ফিরে এসে সড়ক অবরোধ করেন। এতে কিছু সময়ের জন্য পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। তবে পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এই অবরোধের ফলে গুলশান, বনশ্রী, নিকেতনসহ রাজধানীর বেশ কিছু এলাকার সঙ্গে সংযোগ বিঘ্নিত হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে আশপাশের সব সড়কে যান চলাচলে ধীরগতি তৈরি হয়, যা রাজধানীবাসীর দিনভর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান করছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি মানা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
What's Your Reaction?






