নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে পিরোজপুরের উন্নয়নে একগুচ্ছ পরিকল্পনা মাসুদ সাঈদীর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদ সাঈদী বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে সকলকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) পিরোজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন এবং তার ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর মিডিয়া বিভাগের আয়োজনে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এস.এম রেজাউল ইসলাম শামীম এবং সঞ্চালনা করেন প্রেসক্লাবের সদস্য সরোয়ার হোসেন জুয়েল।
সভায় মাসুদ সাঈদী পিরোজপুর পৌরসভার সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "১০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই পৌরসভায় দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন নেই। একক শাসনের নামে শোষণ করে জনগণের টাকায় উন্নয়ন না করে পকেট ভারী করা হয়েছে।" তিনি শহরের ৮ থেকে ১০ ফুট চওড়া রাস্তা, অনুন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সুপেয় পানির অভাব এবং রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কথা তুলে ধরে মানুষের চরম দুর্দশার কথা বলেন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য পৌরসভার সার্বিক উন্নয়নে ৩৫০ কোটি টাকার একটি বড় স্কিম মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে প্রতিটি ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১৮ কোটি টাকার ৬টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বরাদ্দের ব্যবস্থা করেছেন। প্রতিটি প্ল্যান্টের মাধ্যমে ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ উপকৃত হবে।
শিক্ষার প্রসারে তার উদ্যোগের কথা বলতে গিয়ে সাঈদী উল্লেখ করেন, পিরোজপুর ও নাজিরপুরে সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থাকলেও ইন্দুরকানিতে ছিল না। তার প্রচেষ্টায় তিন একর জমির উপর সেখানে একটি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ বরাদ্দ হয়েছে, যা কর্মমুখী শিক্ষা ও বেকার সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখবে।
স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে তার নেওয়া পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন তিনি। তার দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে এবং হাসপাতালের সংস্কার ও উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটর স্থাপনের জন্য সাড়ে সাত কোটি টাকা বরাদ্দ করিয়েছেন। পাশাপাশি, ইন্দুরকানিতে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি নতুন ডাকবাংলো নির্মাণের জন্য ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা, নাজিরপুর হাসপাতালের সংস্কারের জন্য ১০ লক্ষ টাকা এবং নাজিরপুর থানা সংস্কারের জন্য ছয় লক্ষ টাকার বরাদ্দ এনেছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, "আমি আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের সকল ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও আমার এই প্রচেষ্টা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড আরও বেগবান করতে চাই।" এ জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও পিরোজপুর জেলা শাখার আমির বীর মুক্তিযোদ্ধা তাফাজ্জল হোসেন ফরিদ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, সহকারী সেক্রেটারি শেখ আব্দুর রাজ্জাক, পৌর আমির মাওলানা ইছাহাক আলীসহ জেলা জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং প্রেসক্লাবের কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
What's Your Reaction?






