পিরোজপুরে আরিফুল হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

পিরোজপুরে আরিফুল ইসলাম নামে এক তরুণকে হত্যার দায়ে তিনজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পিরোজপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাঁশবুনিয়া গ্রামের শাহআলম হাওলাদারের ছেলে মো. সোহাগ হাওলাদার, বড় শৌলা গ্রামের মো. মনির মৃধার ছেলে মো. সোহাগ মৃধা এবং ছোট শৌলা গ্রামের মো. আজিজ মল্লিকের ছেলে মো. শাহীন মল্লিক। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত সোহাগ হাওলাদার আদালতে উপস্থিত থাকলেও অন্য দুই আসামি সোহাগ মৃধা ও শাহীন মল্লিক পলাতক ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়শৌলা গ্রামের মো. আনোয়ার মিস্ত্রীর ছেলে আরিফুল ইসলাম (১৮) বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। দীর্ঘ সময় ধরে খোঁজাখুঁজির পরও তার কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ১৭ এপ্রিল আরিফুলের পরিবার মঠবাড়িয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।
এর পরদিন, ১৮ এপ্রিল সকালে স্থানীয়রা বড়শৌলা খালে আরিফুলের মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং নিহতের পরিবার মরদেহ শনাক্ত করে। লাশের মাথা, বুক ও পেটে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় ওই দিনই নিহত আরিফুলের মা মোসা. ফরিদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত চলাকালে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ১২ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আসামি করলেও, তদন্ত শেষে দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া এবং সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই রায় প্রদান করেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নিহতের মা মোসা. ফরিদা সন্তোষ প্রকাশ করলেও উচ্চ আদালতে আপিল করার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর আবুল কালাম আকন এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আহসানুল কবির বাদল মামলাটি পরিচালনা করেন।
What's Your Reaction?






