আত্রাইয়ে ৩৬ মনের দানবাকৃতি ষাঁড়, কাঙ্ক্ষিত দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক জাহাঙ্গীর
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার তিলাবুদুরি গ্রামে প্রায় ৩৬ মনের ওজনের একটি দানবাকৃতি ষাঁড় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন প্রবাসফেরত কৃষক জাহাঙ্গীর আলম মল্লিক। দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরের যত্ন ও প্রাকৃতিক খাদ্যদিয়ে লালন-পালনের পর প্রস্তুত ষাঁড়টি দেখে এলাকাজুড়ে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় শঙ্কায় রয়েছেন এই উদ্যোমী খামারি।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে সৌদি আরবে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসেন জাহাঙ্গীর। এরপর কৃষিকাজের পাশাপাশি গরুর খামার গড়ার স্বপ্ন দেখেন। প্রথমে ব্যাংক ঋণ ও জমি বিক্রি করে ১২টি গরু দিয়ে শুরু করেন। গো-খাদ্যের উচ্চমূল্যের কারণে পরে গরুর সংখ্যা কমিয়ে আনেন। এই সময়ে একটি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী থেকে জন্ম নেয় বর্তমান ষাঁড়টি, যার শারীরিক গঠন দেখে বিশেষভাবে পরিচর্যা শুরু করেন তিনি।
ষাঁড়টিকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে—পাকা কলা, গম-ভুট্টার ভূষি, ঘাস ও খড় খাইয়ে বড় করা হয়েছে। প্রতিদিন অনেক মানুষ ষাঁড়টি দেখতে আসছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭–৮ লাখ টাকা দাম বললেও জাহাঙ্গীরের প্রত্যাশা অন্তত ১৪ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, “এত বছরের শ্রম, খরচ আর স্বপ্ন—সবই এই ষাঁড়টিকে ঘিরে। কিন্তু যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, তার তুলনায় এখনো কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছি না।”
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু আনাছ জানান, এবছর উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ২৭ হাজার ৮৮৫টি হলেও প্রস্তুত হয়েছে ৫৩ হাজার ৫৬৭টি। এর মধ্যে ৮ হাজার ৬০৮টি গরু। তিলাবুদুরি গ্রামের জাহাঙ্গীরের ষাঁড়টি এ বছর সবচেয়ে বড়। তিনি বলেন, “রাজধানী বা বিভাগীয় পর্যায়ের হাট ছাড়া এত বড় ষাঁড় বিক্রি একটু কঠিন। তবে আমরা চেষ্টা করছি যেন এই ষাঁড়টি ভালো দামে বিক্রি হয়।”
What's Your Reaction?
কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ)