মাগুরার শালিখায় ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা প্রতিযোগিতা
মাগুরার শালিখা উপজেলায় আয়োজন করা হলো গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা প্রতিযোগিতা। আধুনিক বিনোদনের ভিড়ে বিলুপ্তপ্রায় এই খেলা শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তালখড়ি হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ শত শত দর্শকের উপস্থিতিতে ঢাক-ঢোলের তালে তালে মুখর হয়ে ওঠে পুরো মাঠ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি নেতা মো. কাতেমুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শালিখা উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও জেলা বিএনপির সদস্য মুন্সী মনিরুজ্জামান চকলেট। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য মো. মোতালেব হোসেন সিকদার, যুবদল নেতা মুন্সী নয়নুজ্জামান নয়ন, মাসুদ মুন্সী ও ছাত্রদল নেতা ফিরোজ হোসেন মৃধা। এছাড়া শালিখা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান চাঁদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম রাজীবসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগিতায় ঝিনাইদহ, মাগুরা, শৈলকুপা ও শালিখার দিঘী এলাকার চারটি দল অংশ নেয়। প্রতিটি দলই সাহসিকতা, কৌশল ও শক্তির প্রদর্শনী ঘটায়। প্রতিটি আঘাত-প্রতিআঘাতের সঙ্গে মাঠ জুড়ে প্রতিধ্বনিত হয় দর্শকদের করতালি।
বাংলার গ্রামীণ সমাজে লাঠিখেলা একসময় ছিল জনপ্রিয় বিনোদন ও আত্মরক্ষার কৌশল। গ্রামীণ মেলা, উৎসব কিংবা বিশেষ অনুষ্ঠানে নিয়মিতভাবে আয়োজন হতো এ খেলার। শুধু বিনোদন নয়, লাঠিখেলা ছিল গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও অহংকারের অংশ।
কালের আবর্তে প্রায় হারিয়ে যেতে বসা এ খেলাকে ঘিরে তালখড়ি হাইস্কুল মাঠে এমন আয়োজন প্রমাণ করেছে—গ্রামীণ ঐতিহ্যের প্রতি মানুষের টান এখনো অমলিন। লাঠিখেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় জমায় শত শত মানুষ। স্থানীয়দের মতে, নিয়মিতভাবে এ ধরনের আয়োজন করা গেলে তরুণ প্রজন্ম আবারও লাঠিখেলার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে এবং গ্রামীণ সংস্কৃতির এই ঐতিহ্য সংরক্ষিত থাকবে।
What's Your Reaction?
বিশ্বজিৎ সিংহ রায়, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, মাগুরাঃ