নওগাঁয় ভুয়া পুলিশ ও চাঁদাবাজসহ ৬ জন গ্রেপ্তার

নওগাঁয় পৃথক দুটি অভিযানে পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের চেষ্টাকারী এক নারীসহ চারজন এবং গণ-অধিকার পরিষদের নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে আরও দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নওগাঁ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ার এই তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের জলিল চত্বর চেকপোস্টে একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুইটি ডিএমপি পুলিশের পোশাক, একটি ডিবির জ্যাকেট, দুইটি হ্যান্ডকাফ, দুইটি খেলনা শটগান ও একটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ঢাকার উত্তর ভাটারা এলাকার সাবরিনা, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ পূর্বাচল এলাকার সাইফুল ইসলাম জিন্নাত, রূপগঞ্জের কুলিয়াদি এলাকার দ্বীন ইসলাম এবং ঢাকার রমনা থানার বড় মগবাজার এলাকার ফুল মিয়া।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, তারা মান্দা থানার গোবিন্দপুর এলাকায় শুটিংয়ের জন্য যাচ্ছিলেন। তবে তাদের বক্তব্যে অসংগতি থাকায় এবং কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে তাদের মোবাইল ফোন তল্লাশি করে একটি জিডির কপি পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, তাদের সাবেক কর্মচারী সোহেল রানা অর্থ ও প্রাতিষ্ঠানিক ডকুমেন্টস আত্মসাৎ করে পালিয়ে এসেছেন। এই অভিযোগে সোহেল রানা ও তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে তারা একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার জের ধরে, পুলিশি পোশাকে তারা সোহেল রানা ও তার পরিবারকে অপহরণের উদ্দেশ্যে মান্দায় যাচ্ছিলেন।
তাদের চারজনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অপরদিকে, একইদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের শিমুলিয়া উত্তরপাড়া এলাকা থেকে দুই যুবককে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নওগাঁ শহরের মাস্টারপাড়া এলাকার মো. আরিফ এবং মাদার মোল্লা বলিরঘাট এলাকার ফরহাদ হোসেন ওরফে শোভন।
পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্তরা নিজেদেরকে গণ-অধিকার পরিষদের নেতা পরিচয় দিয়ে নওগাঁ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের একজন নারী কর্মচারীর কাছে চাঁদা দাবি করে। তারা ওই নারীকে আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে আখ্যায়িত করে এবং অতীতে একটি রাজনৈতিক মামলায় তার নাম জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
আলোচনার এক পর্যায়ে তারা ৭০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এবং টাকা না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে চাকরিচ্যুতির ভয় দেখায়। চাঁদার টাকার জন্য চাপ দিলে ওই নারীর চাচাতো ভাই তাদের ১০ হাজার টাকা দেন। বাকি টাকার জন্য কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ওই দুই যুবক চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করে। পরে ভুক্তভোগী নারী তাদের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, নওগাঁ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
What's Your Reaction?






