পিরোজপুর-১ আসনকে মডেল হিসেবে গড়ার প্রতিশ্রুতি মাসুদ সাঈদীর

জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদ সাঈদী বলেছেন, নির্বাচিত হলে তিনি পিরোজপুর-১ আসনকে একটি আধুনিক ও উন্নত মডেল হিসেবে গড়ে তুলবেন। তিনি তার পিতা শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো সমাপ্ত করারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পিরোজপুর সদর উপজেলার ৪নং কলাখালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। কলাখালী হোসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও ঈদগাহ ময়দানে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তব্যে মাসুদ সাঈদী তার পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কথা স্মরণ করে বলেন, "আমার পিতা দীর্ঘ ১০ বছর আপনাদের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। কিন্তু ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শাসনামলে বাধার কারণে তেমন উন্নয়ন করতে পারেননি। তবে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জোট সরকারের সময় তিনি এই আসনে ব্যাপক উন্নয়ন করেছিলেন।" তিনি অভিযোগ করেন, পরবর্তীতে তার পিতা "মিথ্যা অভিযোগে" কারাগারে "পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের" শিকার হন। পিতার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে সেই অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চান বলে জানান তিনি।
জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, "স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন দলের রাষ্ট্রপ্রধান ও নেতারা দুর্নীতি করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। দুর্নীতির অভিযোগে অনেক নেতা-মন্ত্রী কারাভোগও করেছেন। কিন্তু জামায়াতের কোনো নেতা, এমপি বা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। এটিই প্রমাণ করে জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতিতে নয়, বরং ন্যায়-নীতিতে বিশ্বাসী।"
দেশের বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থার সমালোচনা করে মাসুদ সাঈদী বলেন, "স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় সব সরকার ৩০-৩৫ শতাংশ ভোট পেয়ে বাকি ৬৫ শতাংশ ভোটারের মতামতকে উপেক্ষা করে দেশ চালিয়েছে।" তিনি এই প্রথা বাতিল করে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান।
ক্ষমতায় না থেকেও এলাকার উন্নয়নে নিজের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, গত এক বছরে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি পিরোজপুর-১ (জিয়ানগর, পিরোজপুর ও নাজিরপুর) আসনের জন্য উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ আনতে সক্ষম হয়েছেন। এর মধ্যে তিনি জিয়ানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণে সাড়ে সাত কোটি টাকা, ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নির্মাণ, পিরোজপুর পৌরসভার উন্নয়নে ৩৫০ কোটি টাকা এবং সুপেয় পানির জন্য ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা উল্লেখ করেন।
কলাখালী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মো. আরিফ মিয়ার সভাপতিত্বে ও ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হাকিম শেখের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সভাপতি অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক শেখ, সদর উপজেলা আমির মাওলানা মোঃ সিদ্দিকুর রহমানসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
সভার আগে মাসুদ সাঈদী সদর উপজেলার গণকপাড়া, সিকদার মল্লিক, পাঁচপাড়াসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার ও মসজিদে গণসংযোগ করেন।
What's Your Reaction?






