ড. ইউনূসকে মার্কিন ৫ আইনপ্রণেতার চিঠি, যেসব বিষয়ে আহ্বান
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) পাঁচজন প্রভাবশালী সদস্য। চিঠিতে তারা বাংলাদেশে কোনো একটি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ‘হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী যারা
প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির র্যাংকিং মেম্বার গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সাব-কমিটির চেয়ারম্যান বিল হুইজেঙ্গা এবং র্যাংকিং মেম্বার সিডনি কামলেগার ডোভ। এছাড়া এতে আরও স্বাক্ষর করেছেন কংগ্রেস সদস্য জুলি জনসন ও টম সুয়োজি।
নির্বাচন ও সংস্কার প্রসঙ্গে বার্তা
চিঠিতে মার্কিন আইনপ্রণেতারা বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় সংকটের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানান। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে এবং ব্যালটের মাধ্যমে জনগণের মতামতের শান্তিপূর্ণ প্রতিফলন ঘটাতে সব রাজনৈতিক মতাদর্শের পক্ষের সঙ্গে সরকারের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। একই সঙ্গে তারা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
দল নিষিদ্ধ ও ট্রাইব্যুনাল নিয়ে উদ্বেগ
চিঠিতে কংগ্রেসম্যানরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সরকার যদি কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম স্থগিত করে অথবা ত্রুটিপূর্ণ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনরায় চালু করে, তবে গণতন্ত্র ও সংস্কারের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন ব্যাহত হতে পারে।
মানবাধিকার ও আইনি প্রক্রিয়া
সংগঠনের স্বাধীনতা এবং সম্মিলিত দায়ের পরিবর্তে ‘ব্যক্তিগত ফৌজদারি দায়বদ্ধতা’র নীতিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেন কংগ্রেস সদস্যরা।
চিঠিতে তারা স্পষ্ট করেন যে, অপরাধ বা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কোনো ব্যক্তির অপরাধের জন্য পুরো রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম একযোগে নিষিদ্ধ করা মৌলিক মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
What's Your Reaction?
অনলাইন ডেস্কঃ