আগৈলঝাড়ায় কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ মোহনকাঠির অধ্যক্ষ মো. জগলুল ফারুকের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় অভিভাবকরা এ ব্যাপারে সরাসরি কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখন বনিকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অধ্যক্ষ সরকারি বরাদ্দের টিউশন ফি কলেজ শিক্ষকদের না দিয়ে আত্মসাত করেছেন। এছাড়া কলেজের পুকুরের লিজের টাকা কলেজ ফান্ডে জমা না দিয়ে নিজের হাতে রেখেছেন। কলেজের ভিতরে চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণের কাজের প্রায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার হিসাবও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাওয়া যায়নি। কলেজের ব্যাংক হিসাব থেকে ৬৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে কোনো হিসাব দেননি।
প্রতিবছর কলেজ নবায়নের জন্য শিক্ষকদের কাছ থেকে ২৫-৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করলেও ১০-১২ হাজার টাকা খরচ করে বাকি টাকার কোনো হিসাব শিক্ষকদের বা এডহক কমিটির কাছে দেননি। ডিজিটাল ল্যাবের বরাদ্দের টাকার কোনো হিসাবও কলেজে নেই। নিয়মিত কলেজে উপস্থিত না হয়ে একসাথে ১০-১৫ দিনের হাজিরার স্বাক্ষর দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এছাড়া, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করার নিয়ম থাকলেও কলেজে তা পালন করা হয়নি। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে অবসরপ্রাপ্ত বাংলা বিভাগের প্রভাষক শ্যামল কান্তি কর গুপ্ত এখনও তার ছাড়পত্র পাননি। কলেজের হিসাবসহকারীকে দিয়ে অধ্যক্ষ ওই প্রভাষকের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেছেন, যা না দেওয়ায় ছাড়পত্র আটকে আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছেন। এছাড়া এডহক কমিটির অভিভাবক সদস্য নাজমুল ইসলাম ২০ অক্টোবর নিজ হাতে লিখিত অভিযোগ কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছেন।
অভিযোগ প্রাপ্ত হলে কলেজ অধ্যক্ষ মো. জগলুল ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। সকল হিসাব কলেজে আছে, তবে তা দেখাতে পারিনি।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, “অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এডহক কমিটির সভাপতি লিখন বনিক বলেন, “এ পর্যন্ত আমার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে মৌখিকভাবে অভিভাবকরা কিছু কথা বলেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”
What's Your Reaction?
মো: মনিরুজ্জামান আগৈলঝাড়া(বরিশাল) প্রতিনিধি