পাঁচ বছর ক্লাস না নিয়েও সরকারি বেতন ভাতা নিচ্ছেন শিক্ষক
নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার কাশীপুর মুহাম্মদিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ইংরেজি শিক্ষক হোসেন মিয়া সরকারি নিয়মে বেতনভুক্ত হলেও গত পাঁচ বছর কোনো ক্লাস না নিয়ে নিয়মিত বেতন-ভাতা ও বোনাস নিচ্ছেন। এই অনিয়মে একই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলা উদ্দিনের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে।
সরেজমিনে জানা যায়, ২০২১ সাল থেকে হোসেন মিয়া মাদ্রাসায় কোনোদিন উপস্থিত হননি। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা এই শিক্ষককে কখনো ক্লাস নিতে দেখেনি, এমনকি ব্যক্তিগতভাবে চিনতেও পারেনি। হাজিরার নথিতে কখনো তাঁর স্বাক্ষর, আবার কখনো ছুটির নথি দেখানো হয়েছে। তবে কেনো বা কীভাবে তিনি দীর্ঘ সময় মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকেও বেতন নিচ্ছেন, তা প্রশাসন ও কমিটির কেউ জানেন না।
অধ্যক্ষ মাওলানা আলা উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, “এই নিয়ম আমার আগের অধ্যক্ষের সময় থেকে চলে আসছে। যদিও আমি প্রায় চার বছর এই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, নতুন কমিটির সমন্বয়ে বিষয়টি কার্যকরীভাবে সমাধান করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “প্রতিষ্ঠানের বেতন নথিতে স্বাক্ষর করার নিয়ম থাকলেও আমি এখন ঢাকায় আছি। আগামীকাল আসলে বিষয়টি দেখানো সম্ভব হবে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, অধ্যক্ষের সহায়তায় হোসেন মিয়া হাজিরার স্বাক্ষর করতে পারছেন, মাদ্রাসায় না আসলেও সরকারি তহবিল থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। এটি শিক্ষা ব্যবস্থায় এক ধরনের দুর্নীতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার উদাহরণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
মাদ্রাসার সভাপতি ও পরিচালনা কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি একাধিকবার আলোচনা হয়েছে, তবে অধ্যক্ষ কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
অভিভাবকরা ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়ে অবিলম্বে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
What's Your Reaction?
রিপন মজুমদার, জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালীঃ