নোয়াখালীতে খালে মাইক্রোবাস পড়ে একই পরিবারের সবার মৃত্যু

প্রবাসীকে বরণ করে বাড়ি ফেরার আনন্দ মুহূর্তেই পরিণত হলো এক বুকফাটা আর্তনাদে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে চালকের ঘুমের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মাইক্রোবাস খালে পড়ে ওমান প্রবাসী এক ব্যক্তির পরিবারের সাত সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় একটি পরিবারের স্বপ্ন ও আনন্দযাত্রা এক নিমিষেই শেষ হয়ে যায়, যা পুরো এলাকায় শোকের ছায়া ফেলেছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরের আলো ফোটার ঠিক আগে, আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে নোয়াখালী-লক্ষীপুর সড়কের পূর্ব চন্দগঞ্জের গজদীশপুর এলাকায় এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিনের মা মোরশিদা বেগম (৫৫), স্ত্রী কবিতা (২৪), মেয়ে মিম, ভাবি লাবনী (৩০), দুই ভাতিজি রেশমী (৮) ও লামিয়া (৯), এবং তার বৃদ্ধ নানী (৮০)। তারা সবাই লক্ষীপুর জেলার হাজিপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম চওপল্লী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ভূঁইয়া জানান, ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিনকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে নিয়ে মাইক্রোবাসটি লক্ষীপুরে তাদের বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। ভোরের দিকে চালক সম্ভবত ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের গভীর খালে পড়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে এবং পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস যোগ দেয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। গাড়ির ভেতর থাকা সাতজনকেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরও বলেন, "প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের চোখে ঘুম থাকায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর থেকেই চালক পলাতক রয়েছে। আমরা দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসটি জব্দ করেছি।"
তিনি জানান, মরদেহগুলো আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে এবং এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হবে।
একসাথে এক পরিবারের সাতজনের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় শোকের মাতম চলছে। যে বাড়িটি প্রবাসীর আগমনে উৎসবে মেতে ওঠার কথা ছিল, সেই বাড়িতে এখন কেবল কান্নার রোল। এই ঘটনা সড়কপথে, বিশেষ করে দীর্ঘ যাত্রায় চালকদের বিশ্রাম ও সতর্কতার গুরুত্বকে আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে।
What's Your Reaction?






