ডিইপিজেডের ভেতরেই কর্মকর্তাকে তুলে নিয়ে চাঁদাবাজি

ঢাকার আশুলিয়ায়, ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ডিইপিজেড) ভেতর থেকে এক কর্মকর্তাকে দিনদুপুরে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ও আশুলিয়া থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মো: দেলোয়ার হোসেন মিন্টুকে প্রধান আসামি করে মোট ৩২ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ডিইপিজেডের মতো একটি সুরক্ষিত এলাকার ভেতরে এমন দুঃসাহসিক ঘটনায় সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী মহলে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তা আশিক হাসান (৩০) ডিইপিজেডের সুইফট লজিস্টিক সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। গত ৩১শে জুলাই, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে ডিইপিজেড কাস্টম অ্যাসোসিয়েশন ভবনের নিচতলায় এই ঘটনা ঘটে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন মিন্টুর নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে আশিক হাসানের প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রতি মাসে ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাকে বিভিন্ন সময় হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।
ঘটনার দিন দুপুর দেড়টার দিকে আশিক হাসান যখন অফিসের ট্যাক্সের টাকা গণনা করছিলেন, তখন মিন্টুর নির্দেশে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে হামলা চালায়। এজাহারে নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে রয়েছে জীম, শাহজাহান সুমন, রাশেদ আহাম্মেদ টুটুল, ফরহাদ হোসেন, গলাকাটা আরিফ, নাঈমসহ অনেকে।
সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং জোরপূর্বক একটি অটোরিকশায় তুলে ভাদাইলে অবস্থিত প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন মিন্টুর অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে মিন্টুর উপস্থিতিতে তাকে কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে লোহার রড ও জিআই পাইপ দিয়ে পুনরায় বেধড়ক মারধর করা হয়। এ সময় তার কাছে থাকা প্রতিষ্ঠানের ট্যাক্সের ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকাও জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী আশিক হাসান বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় দেলোয়ার হোসেন মিন্টুকে প্রধান আসামি করে ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং – ০২, তারিখ- ০২-০৮-২৫ ইং)।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান বলেন, "বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা হয়েছে। দোষী যেই হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে ইতিমধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।"
এই ঘটনায় ডিইপিজেডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ প্রসঙ্গে বেপজার নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, "ঘটনাটি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীরা সশস্ত্র না থাকায় শুধু লাঠি দিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। আমরা দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপত্তা বৃদ্ধি-সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।"
What's Your Reaction?






