রাজশাহীতে মশার উপদ্রব চরমে, বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

রাজশাহী মহানগরীতে মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দিনরাত মশার কামড়ে অতিষ্ঠ নগরবাসী। সিটি করপোরেশনের মশা নিধন কার্যক্রম কার্যত বন্ধ থাকা এবং ড্রেন ও নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা।
নগরীর অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক, সর্বত্রই এখন মশার দাপট। বর্ণালীর মোড়, তেরোখাদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ড্রেনগুলো ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে, যা মশার প্রধান প্রজনন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। "দিনের বেলাতেও দোকানে টেকা দায়," বলেন এক স্থানীয় ব্যবসায়ী। "সারাক্ষণ কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়, যার ধোঁয়ায় নিজেরই শ্বাসকষ্ট হয়।" বাসা-বাড়িতেও একই অবস্থা। দিনের বেলায়ও অনেককে মশারির নিচে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতেও মশার কারণে ক্রেতাদের স্বস্তিতে বসা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মশার এই বংশবৃদ্ধির সরাসরি ফল হিসেবে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। চলতি বছর এরই মধ্যে ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এবং হাসপাতালে এখনো ২৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, করোনার চেয়েও ডেঙ্গু ভয়ংকর হতে পারে, কিন্তু এই রোগ নিয়ে জনসচেতনতা অনেক কম।
এই সংকটজনক পরিস্থিতি নিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন ডলার সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ওয়ার্ড পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি না থাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে কিছুটা স্থবিরতা এসেছে। তিনি বলেন, "বর্তমানে লার্ভিসাইড বা ফগার মেশিনের ওষুধ কেনা হচ্ছে না। আমরা ড্রেন ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।" তিনি আশ্বাস দেন, আগামী অক্টোবরে মশক নিধনের জন্য নতুন করে প্রায় ৬০-৭০ লাখ টাকার ওষুধ কেনা হবে।
আপাতত, সিটি করপোরেশনের ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির দিকে তাকিয়েই দিন পার করছেন ভুক্তভোগী নগরবাসী, নিত্য সঙ্গী মশার কামড় আর ডেঙ্গুর আতঙ্ক।
What's Your Reaction?






