ভিজিডির চাল পেতে চাঁদা, নওগাঁয় প্যানেল চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নে ভিজিডি (দুঃস্থ নারী উন্নয়ন) কর্মসূচির চাল পেতে উপকারভোগীদের কাছ থেকে জোর করে এক হাজার টাকা করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান সোহেল রানাসহ চারজনের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২ জুন) দুপুরে এই ঘটনার প্রতিবাদে রাইঝোর ব্রিজ মোড় এলাকায় শতাধিক ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় দুই বছরের জন্য প্রতি মাসে নির্ধারিত পরিমাণ চাল পেয়ে থাকেন তারা। মেয়াদ শেষে নতুন তালিকা না হওয়ায় জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চাল বিতরণ বন্ধ ছিল। পরে পুরোনো তালিকার মেয়াদ বাড়িয়ে একসঙ্গে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত পাঁচ মাসের ১৫০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।
তবে চাল নিতে গিয়ে ইউনিয়নের অন্তত ২০০ জন কার্ডধারীর কাছ থেকে জোর করে এক হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
আঙ্গুরী আক্তার নামের এক নারী বলেন, “চাল দেওয়ার আগে গ্রাম পুলিশ আলামিন চেয়ারম্যানের নাম করে হুমকি দিয়ে আমার কাছ থেকে টাকা নেয়। না দিলে চাল দেবে না—এমনও বলে।”
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “ইউপি সদস্য রিঙ্কু সরাসরি হুমকি দেন—এক হাজার টাকা না দিলে চাল পাব না। বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়েছে।”
এছাড়া সাজেদা বেগম, আনোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে বলেন, “প্যানেল চেয়ারম্যান ও তার ঘনিষ্ঠরা মিলে জোর করে এই টাকা নিয়েছে। এটা সরাসরি দুর্নীতি।”
এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, “জনগণ জনপ্রতিনিধিদের কাছে সেবা প্রত্যাশা করে। কিন্তু তারা যদি এভাবে চাঁদা তোলে, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিচার হওয়া উচিত।”
অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ আলামিন নিজেই স্বীকার করে বলেন, “চেয়ারম্যান ও মহিলা সদস্যের নির্দেশে আমি ৪০ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। নিজে থেকে করিনি।”
তবে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম রিঙ্কু বলেন, “আমি কাউকে টাকা দিতে বলিনি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
অভিযোগ অস্বীকার করে প্যানেল চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, “যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে জানায়নি কেন? আমি এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই।”
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর উপজেলার ইউএনও ইবনুল আবেদীন বলেন, “ভিজিডির চাল নিতে উপকারভোগীর কাছ থেকে কোনো ধরনের অর্থ নেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ টাকা নিয়ে থাকলে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
What's Your Reaction?






