ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার 'বাতিঘর' শিক্ষক মুক্তার হোসেনের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ জনপদ

যার স্নেহ আর শাসনে হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন আলোকিত হয়েছে, সেই বাতিঘর নিভে গেল। আলফাডাঙ্গা আসাদুজ্জামান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জনপ্রিয় সিনিয়র শিক্ষক এবং বাকাইল গ্রামের কৃতি সন্তান মোহাম্মদ মুক্তার হোসেন আক্কাস (৫৯) আর নেই। রবিবার (৩ আগস্ট) রাত এগারোটার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তার এই আকস্মিক মৃত্যুতে শুধু তার পরিবার বা কর্মস্থল নয়, বরং পুরো আলফাডাঙ্গা উপজেলা জুড়েই নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
মোহাম্মদ মুক্তার হোসেন আক্কাস শুধু একজন মেধাবী শিক্ষকই ছিলেন না, ছিলেন তার ছাত্রীদের কাছে একজন প্রকৃত অভিভাবক। তার অনন্য পড়ানোর ভঙ্গি, শিক্ষার্থীদের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং ব্যক্তিগত খোঁজ-খবর নেওয়ার অভ্যাসের কারণে তিনি ছিলেন সবার প্রিয় 'আক্কাস স্যার'। স্থানীয়দের কাছে তিনি একজন সৎ, নির্লোভ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
প্রিয় সহকর্মীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন আলফাডাঙ্গা আসাদুজ্জামান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, "আক্কাস স্যার ছিলেন একজন অত্যন্ত গুণী এবং নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। তার চলে যাওয়া আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তার মতো শিক্ষক পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।"
বিএনপি নেতা আব্বাস শোক প্রকাশ করে বলেন, "আক্কাস স্যার শুধু শিক্ষকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন সমাজের একজন বিবেকবান মানুষ। এলাকার উন্নয়নে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার মৃত্যুতে আমরা একজন সৎ ও নির্লোভ মানুষকে হারালাম।"
এলাকার সুধীজনরা বলেন, "আক্কাস স্যারের মতো মানুষ সমাজে বিরল। তিনি সবসময় মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।"
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সোমবার বেলা দুইটায় বাকাইল ঈদগাহ মাঠে তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। তার জানাজায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক, অগণিত ছাত্রছাত্রী এবং সর্বস্তরের মানুষ অশ্রুসিক্ত নয়নে অংশ নেন।
What's Your Reaction?






