ধসে পড়া সড়কই এখন মরণ ফাঁদ, বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি

একটানা প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি। উপজেলার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বিশাল অংশ ধসে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় হাজারো মানুষ চরম আতঙ্কে দিন পার করছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায় এক ভয়াবহ চিত্র। উপজেলার ৩নং আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের বিজয় পাড়া এলাকায় কচ্ছপতলি-রোয়াংছড়ি সংযোগ সড়কের প্রায় ১০০ ফুট অংশ খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ধসের কারণে সড়কের কিনারা থেকে মাটি সরে গিয়ে বিদ্যুতের একটি খুঁটি опасноভাবে ঝুলে আছে, যা যেকোনো মুহূর্তে তারসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার জন্ম দিতে পারে। এই সড়কটিই উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম, যা দিয়ে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী, কৃষক ও সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে।
স্থানীয় কলা ব্যবসায়ী ও একজন গাড়িচালক বলেন, "বহু বছর ধরে এই রাস্তা দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছি। এখন রাস্তা এমনভাবে ভেঙেছে যে, গাড়ি নিয়ে যাওয়া তো দূরের কথা, হেঁটে চলতেও ভয় করে। কৃষকের উৎপাদিত পণ্য পরিবহন এখন পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার পথে।"
বিপর্যয় শুধু একটি স্থানেই সীমাবদ্ধ নেই। ৪নং নোয়াপতং ইউনিয়নের কানাইজো পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক এবং বেংছড়ি সড়কে তারাছা খালের ওপর নির্মিত গার্ডার সেতুর পাশসহ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ধস নেমেছে। এ ছাড়া গ্রোক্ষ্যং পাড়ার ভেতরে একটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে গ্রামবাসীরা চরম ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন।
এ বিষয়ে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক ও সাবেক ইউপি সদস্য সাচিংথুই মারমা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, "এই রাস্তা দিয়ে আমাদের দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা চলাচল করতে হয়। এখন বৈদ্যুতিক খুঁটি ঝুলে থাকায় রাস্তায় নামতেই ভয় লাগছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটে যেতে পারে।" তিনি অবিলম্বে স্থানীয় প্রশাসন ও বিদ্যুৎ বিভাগকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান।
কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত এই ধসে পড়া সড়কগুলো মেরামত না করে, তাহলে শুধু যোগাযোগই বিচ্ছিন্ন হবে না, বরং পুরো এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা ও অর্থনীতি এক গুরুতর সংকটের মুখে পড়বে।
What's Your Reaction?






