আখাউড়ায় নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু: কেরি ট্যাবলেট খাইয়ে ‘হত্যার’ অভিযোগ স্বজনদের

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মাত্র আট মাসের বৈবাহিক জীবনে শেষ হলো এক তরুণীর প্রাণ—কেরি ট্যাবলেট খেয়ে মারা গেছেন ১৯ বছর বয়সী গৃহবধূ জোনাকী আক্তার।
বুধবার (১১ জুন) বিকেল ৩টার দিকে স্বামী জুয়েল মিয়া তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, জোনাকী আক্তার আখাউড়া পৌরসভার দেবগ্রাম পূর্বপাড়ার বাসিন্দা জুয়েল মিয়ার স্ত্রী। তাঁর বাবার বাড়ি মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মনিয়ন্দ গ্রামে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের পর থেকেই টাকার লেনদেন ও খরচ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল। ঈদুল আজহার পরে সোমবার বিকেলে জুয়েল স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যান, কিন্তু বুধবার ভোরে তিনি একাই ফিরে আসেন। ওই দিনই শ্বশুরবাড়ির আপ্যায়ন নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবারও ঝগড়ার জেরে জোনাকী কেরি ট্যাবলেট গিলে ফেলেন বলে পরিবারের দাবি।
নিহতের বড় বোন পপি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, “ঘর তোলার কথা বলে জুয়েল আমাদের কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়েছে। বোনের সোনার চেইনটাও বিক্রি করে খেয়েছে। আমার বিশ্বাস, ও-ই জোর করে কেরি ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।”
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. লুৎফর রহমান বলেন, “বিকেল তিনটার দিকে রোগীকে আনা হয়। স্বজনদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি কেরি ট্যাবলেট খেয়েছেন। দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।”
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন বলেন, “মরদেহ থানায় নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার বিষয়টি প্রতীয়মান হলেও, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
এই মৃত্যু আত্মহত্যা, না কি গোপন কোনো পরিকল্পিত হত্যার অংশ—তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
What's Your Reaction?






