রোয়াংছড়ি বাজারে গণশৌচাগার নেই, পর্যটক ও স্থানীয়দের চরম ভোগান্তি

বান্দরবানের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত রোয়াংছড়ি উপজেলা পর্যটকদের কাছে এক জনপ্রিয় গন্তব্য। শীলবান্ধা ঝর্ণা ও দেবতাকুমের মতো প্রাকৃতিক আকর্ষণে মুগ্ধ হয়ে প্রতিদিন হাজারো ভ্রমণপিপাসু ছুটে আসেন এখানে। তবে পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিতি পেলেও উপজেলা সদরের বাজারে একটিও গণশৌচাগার না থাকায় পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
রোয়াংছড়ি উপজেলার প্রায় ১৮ হাজার মানুষ তাদের দৈনন্দিন কেনাকাটার জন্য উপজেলা সদরের এই বাজারের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে কৃষক, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য বেচাকেনার জন্য এখানে আসেন। কিন্তু বাজারে স্বাস্থ্যসম্মত গণশৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় চরম বিপাকে পড়েন তারা। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু বছর ধরেই বাজারে কোনো গণশৌচাগার নেই। পূর্বে কয়েকটি থাকলেও সেগুলো ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে এবং এ বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আমাদের কথা শোনার কেউ নেই। দূরের গ্রাম থেকে বাজারে এসে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক সময় পরিচিতদের বাড়িতে গিয়ে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে হয়, কিন্তু অপরিচিতদের জন্য সেই সুযোগও থাকে না।"
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো. বাকের আলী বলেন, "সারাদিন গাড়িতে চড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে আসি। কিন্তু বাজারে এসে দেখি একটিও গণশৌচাগার নেই। এতে আমাদের চরম লজ্জায় পড়তে হয়।" নারী পর্যটকদের অভিযোগ আরও গুরুতর। তারা জানান, পুরুষরা যেকোনো স্থানে প্রয়োজন সারতে পারলেও নারীদের জন্য তা সম্ভব হয় না, যা তাদের জন্য অবর্ণনীয় দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এ বিষয়ে রোয়াংছড়ি গাইড সমিতির সভাপতি চিংনুমং মারমা জানান, রোয়াংছড়ি বাজারে একটি গণশৌচাগার থাকা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, "স্থানীয় প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পর্যটকদেরও অনেক উপকার হবে।"
অবশেষে এই ভোগান্তির অবসানের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান কাউছার। তিনি বলেন, "ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় ও পর্যটকদের সুবিধার্থে দ্রুতই গণশৌচাগার নির্মাণ করা হবে।" শুধু তাই নয়, পর্যটন কেন্দ্র দেবতাকুমকে আরও দৃষ্টিনন্দন ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
What's Your Reaction?






