থানচিতে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির উদ্যোগ বিএনকেএসের
বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের দুটি সুবিধাবঞ্চিত গ্রামে স্বাস্থ্যসম্মত গণশৌচাগার স্থাপন ও বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে বলিপাড়া নারী কল্যাণ সমিতি (বিএনকেএস)।
উপজেলার হালিরাং পাড়া ও ঙাইক্ষ্যং পাড়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে চলমান স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপদ পানির সংকট নিরসনে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সম্প্রতি এসব কার্যক্রমের ওপর স্থানীয় সরকার ও বেসরকারি প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যৌথ মনিটরিং পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার আয়োজিত এ যৌথ মনিটরিং ভিজিটে অংশ নেন স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সিভিল সোসাইটির সদস্য, সাংবাদিক, অন্যান্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা। সরেজমিনে তারা প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করে বলিপাড়া নারী কল্যাণ সমিতি (বিএনকেএস) এবং এতে সহযোগিতা করে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড (ActionAid)। এ সময় এলআরপি (LRP) প্রকল্পের আওতায় পানীয় জল ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন অবকাঠামো উন্নয়ন এবং জনগণের অংশগ্রহণমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা হয়।
মনিটরিং দলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক হ্লাসুইথোয়াই মারমা, প্রেস ক্লাবের সভাপতি অনুপম মারমা, সমাজসেবা কার্যালয়ের সুপারভাইজার মো. আমীর হোসেন, প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মেনসিং ম্রো, বিএনকেএস-এর প্রোগ্রাম অ্যান্ড স্পনসর কর্মকর্তা মংক্যওয়াং মারমা, ফিল্ড অর্গানাইজার ক্যথুইঅং মারমাসহ সংশ্লিষ্টরা।
বিএনকেএস কর্মকর্তারা জানান, এলআরপি প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের সমবায় সংগঠন লাবারং সমিতিকে ৫০ হাজার টাকা এবং ঙাইক্ষ্যং পাড়া নারী সমিতির নিবন্ধনের জন্য ২০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি হালিরাং পাড়ায় তিনটি স্বাস্থ্যসম্মত গণশৌচাগার নির্মাণ এবং জিএসএফ পাইপলাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ঙাইক্ষ্যং পাড়ার ৭০টি পরিবারের জন্য একটি ডিপ টিউবওয়েল ও জেনারেটর স্থাপন করা হয়।
প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি গ্রামে নিরাপদ পানির উৎস স্থাপনের পাশাপাশি স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করায় গ্রামবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার হবে এবং পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নকে বিএনকেএস তাদের অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামবাসীরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ও বিশুদ্ধ পানীয় জল তাদের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অংশগ্রহণকারীরা আরও জানান, এ ধরনের যৌথ মনিটরিং কার্যক্রম প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ভবিষ্যতেও এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
What's Your Reaction?
অনুপম মারমা, থানচি প্রতিনিধি, বান্দরবানঃ