চাইনিজ সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশ বিরোধী মন্তব্য ইন্দুরকানীর রিপন শীলের

মোঃ নাজমুল হোসেন,জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুরঃ
Oct 19, 2025 - 14:37
 0  2
চাইনিজ সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশ বিরোধী মন্তব্য ইন্দুরকানীর রিপন শীলের

সম্প্রতি চীনে অবস্থানকালে চাইনিজ সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন রিপন চন্দ্র শীল।

রিপন চন্দ্র শীল পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার ৪ নং ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের কার্তিক চন্দ্র শীল এর ছেলে।

জানা যায়, রিপন চন্দ্র শীল পূর্বে সেলুনের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পরে চলতি বছরের ১৭ মার্চ চীনা ব্লগার তাকে নিয়ে ভিডিও করে  চাইনিজ পরিচালিত একটি জনপ্রিয় চ্যানেল “গ্লোবাল স্টোরি” তে ভিডিও আপলোড করলে তার সেই ভিডিও অল্প সময়ের মধ্যেই ভাইরাল হয় এবং তিনি দ্রুতই চাইনিজ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পরিচিতি পান। পরবর্তীতে তিনি প্রায় ৫০টিরও বেশি ভিডিও তৈরি করে বিভিন্ন চাইনিজ মিডিয়া চ্যানেলে প্রকাশ করেন এবং জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। 

পরে ২০২৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর, এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে রিপন চন্দ্র শীল চীনের একটি শহরে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সফর করেন। কিন্তু ওই সফরের মধ্যেই তিনি লাইভ সম্প্রচারে বাংলাদেশ সম্পর্কে অবমাননাকর ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেন ও হাসি তামাশা করেন। বক্তব্যে তিনি “বাংলাদেশ একটি অনুন্নত ও নোংরা দেশ এখানে মানুষের বসবাসের উপযোগিতা নেই” বলে মন্তব্য করেন। এমনকি তার পরিবারকে সবাই নির্যাতন করে বলে মিথ্যা তথ্য ছড়ায়।

বাংলাদেশ নিয়ে তার এই মন্তব্য মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, রিপন চন্দ্র শীল চাইনিজ প্ল্যাটফর্মে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার আগে সেলুনের দোকানের পাশাপাশি মাদক সেবন, ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। 

রিপন শীলের এমন বক্তব্যে এলাকাবাসী তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, রিপন চন্দ্র শীলের পরিবারের সবাই এখনো বাংলাদেশে থাকেন। অথচ সে কিভাবে মাতৃভূমি নিয়ে এমন মন্তব্য করেন।  তারা আরো বলেন কিছু দিন আগে কিছু চাইনিজ ব্লগার তাদের বাড়িতে আসতে দেখি এবং পরবর্তীতে জানতে পারি রিপন চন্দ্র শীল চায়নাতে ঘুরতে গিয়েছে। ওখানে গিয়ে আমাদের দেশ নিয়ে তার এমন বক্তব্যে দেশ বিরোধী ছাড়া আর কিছুই নয়। সে তার ব্যক্তিগত সার্থের কারনেই বাংলাদেশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন। এছাড়া আমরা শুনেছি তার এমন বক্তব্যের কারনেই চাইনিজ ব্লগার তাকে বেশ মোটা অংকের টাকা দিয়েছেন। 

এই ঘটনা বাংলাদেশের তরুণ সমাজে বিদেশি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে জনপ্রিয়তা অর্জনের প্রবণতা এবং তার নেতিবাচক প্রভাবের একটি জোরালো উদাহরণ। ব্যক্তিগত স্বার্থে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রবণতা রোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের যথাযথ প্রয়োগের দাবি উঠেছে সচেতন মহলে।

রিপন চন্দ্র শীলের বড় ভাই বাদল চন্দ্র শীল বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে অনেক বছর ধরে যোগাযোগ নেই। তবে সে চায়নাতে গিয়েছে সেটা শুনেছি বাংলাদেশ নিয়ে তার এমন বক্তব্যে আমিও হতাশ সে কেনো এই ধরনের বক্তব্য দিয়েছে সেটা আমারও জানা নেই। এছাড়া রিপন চন্দ্র শীলের পরিবারের উপর কেউ অত্যাচার করে কিনা এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ভাই আর আমার ঘর পাশাপাশি এমন কোনো ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে আমি শুনিনি বা দেখিনি।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow