নওগাঁর আত্রাইয়ে ইউএনও ও এসিল্যান্ডের পদ শূন্য

নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ডের মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকায় প্রশাসনিক ও ভূমি সেবায় চরম অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। এতে সাধারণ সেবাগ্রহীতারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, যে কাজ একদিনে হওয়ার কথা, তা শেষ হতে এখন এক মাস পর্যন্ত সময় লাগছে।
জানা গেছে, এই উপজেলায় গত দুই মাস ধরে ইউএনও এবং প্রায় নয় মাস ধরে এসিল্যান্ডের পদ শূন্য রয়েছে। গত ১ জুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামাল হোসেন অন্যত্র বদলি হয়ে গেলে পদটি শূন্য হয়। এর আগে, গত বছরের ৩০ অক্টোবর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিনথিয়া হোসেন বদলি হওয়ার পর থেকে এসিল্যান্ডের পদটিও খালি পড়ে আছে।
বর্তমানে পার্শ্ববর্তী রাণীনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার রাকিবুল হাসান অতিরিক্ত হিসেবে আত্রাই উপজেলার ইউএনও এবং এসিল্যান্ডের দায়িত্ব পালন করছেন। একটি উপজেলার কর্মকর্তার পক্ষে দুটি উপজেলার গুরুদায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিশেষ করে, জমি খারিজ, নামজারি, জরিপসহ ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে সাধারণ মানুষকে অবর্ণনীয় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
জরুরি প্রয়োজনে জমি বিক্রি করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। নামজারি ও খারিজ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে সময়মতো জমি বিক্রি করতে না পারায় আর্থিক সংকটে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা।
পাঁচুপুর গ্রামের ডা. শরিফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "এসিল্যান্ড না থাকায় আমাদের গ্রামের কবরস্থানের একটি জমির কাগজপত্র ঠিক করতে দিনের পর দিন ঘুরেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এই নিয়ে আমরা গ্রামবাসী চরম দুর্ভোগে আছি।"
ভরতেতুলিয়া গ্রামের জামাল শেখ বলেন, "জমির খারিজ বা নামজারি করতে এত দেরি হচ্ছে যে, জরুরি প্রয়োজনে কেউ জমি বিক্রিও করতে পারছে না। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার।"
এ বিষয়ে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, "দুটি উপজেলার দায়িত্ব পালনে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমি আমার সরকারি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে বেশ কিছু এসিল্যান্ড প্রশিক্ষণে রয়েছেন। আশা করি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ের মধ্যে এখানে নতুন এসিল্যান্ড নিয়োগ দেবেন।"
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। তাদের দাবি, দ্রুততম সময়ে স্থায়ী ইউএনও এবং এসিল্যান্ড নিয়োগ দিয়ে উপজেলার প্রশাসনিক অচলাবস্থা নিরসন এবং জনভোগান্তি লাঘব করা হোক।
What's Your Reaction?






