রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে ব্যতিক্রমী মাদকবিরোধী সমাবেশ

শুধুমাত্র স্লোগান বা র্যালিতেই সীমাবদ্ধ নয়, অন্ধকার পথ ছেড়ে আলোর পথে ফিরে আসাদের হাত ধরে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার এক অনন্য নজির স্থাপিত হলো কাপ্তাইয়ের চিৎমরমে। "মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, দেশের যুব সমাজকে বাঁচান" – এই স্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিতে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের উদ্যোগে মাদক তৈরি ছেড়ে দেওয়া ২১ জনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং জেলেদের মাঝে জাল বিতরণের মধ্য দিয়ে এক ব্যতিক্রমধর্মী মাদকবিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) সকালে কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই মানবিক ও প্রশংসনীয় আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে, চিৎমরম বাজার থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য ক্যওসিং মং এর সভাপতিত্বে এবং চিৎমরম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংসুইছাইন মারমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ নাজমুল হাসান।
সভায় বক্তারা বলেন, "মাদক আমাদের সমাজ ও যুব প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এর ব্যবহার বন্ধ করতে হলে প্রথমে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।" তারা পরিবারের সন্তানদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা মাদক তৈরি বা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আঁখি তালুকদার, ৩নং চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওয়েশ্লিমং চৌধুরী সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
আলোচনা শেষে অনুষ্ঠানে এক মানবিক আবহ তৈরি হয়। মাদক তৈরি বন্ধ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার স্বীকৃতিস্বরূপ ২১ জনকে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। এছাড়া, স্বাবলম্বী করার প্রয়াসে ২০ জন জেলের মাঝে জাল বিতরণ এবং তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৬০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ তুলে দেন অতিথিরা।
প্রশাসনের এই ব্যতিক্রমী ও গঠনমূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, শুধুমাত্র শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে পুনর্বাসনের এই প্রচেষ্টা মাদক নির্মূলে অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
What's Your Reaction?






