"বৃত্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ চাই" - ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

"আমরাও বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে চাই। আমরা ভালো ফলাফলের জন্য অনেক চেষ্টা করি। আমাদের সুযোগ না দিলে খুব খারাপ লাগবে।"—কথাগুলো বলছিল বেগম সালেহা একাডেমীর পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী আমেনা খাতুন। তার এই নিষ্পাপ আকুতিতে সোমবার দুপুরে ভারি হয়ে ওঠে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা চত্বর।
সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন। এই সিদ্ধান্তকে "বৈষম্যমূলক" এবং "শিক্ষানীতি পরিপন্থী" আখ্যা দিয়ে শত শত শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা ক্যাম্পাসে আয়োজিত এই মানববন্ধন শেষে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সেই পরিপত্রটি বাতিলের জোর দাবি জানানো হয়।
এর আগে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন, "বৃত্তি শুধু একটি আর্থিক সহায়তা নয়, এটি একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস, সামাজিক স্বীকৃতি এবং শিক্ষাগত অগ্রগতির জন্য অনুপ্রেরণা। যখন একটি শিশু দেখবে তার সহপাঠীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে, কিন্তু সে নিতে পারছে না, তখন তা তার কোমল মনে একটি নেতিবাচক ও বৈষম্যমূলক প্রভাব ফেলবে।"
অনির্বাণ স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান মাসুদ বলেন, "বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই এই শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হলে তাদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।" সালেহা একাডেমীর প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম যোগ করেন, "এই সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষার্থীদের পরিবার যে মানসিক চাপ ও যন্ত্রণার শিকার হবে, তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।"
কর্মসূচিতে বেগম সালেহা একাডেমি, অনির্বাণ স্কুল, কোয়ালিটি ইংলিশ মিডিয়াম, কামারগ্রাম শাহানারা একাডেমি এবং পাবলিক বুলবুলি চাইল্ড একাডেমিসহ মোট ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা দ্রুত এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত বাতিল করে সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
What's Your Reaction?






