খাগড়াছড়িতে মাদরাসাছাত্র সোহেল হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত ও নিহত মাদরাসাছাত্র মো. সোহেলের (১৪) হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে মানিকছড়ি উপজেলার কয়েকশ মানুষ। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলটি খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মানববন্ধনে নিহত সোহেলের মা রাবেয়া আক্তার তার একমাত্র সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের মহাসচিব ও সাবেক মেয়র আলমগীর কবির বলেন, "এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা অবিলম্বে সকল আসামির গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে তাদের ফাঁসি দাবি করছি।" তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোকতাদের হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা পিসিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম মাসুম রানা এবং মহিলা পরিষদের জেলা সভাপতি হাসিনা আকতার। বক্তারা বলেন, সোহেল হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে হবে।
বক্তারা সোহেল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সাতজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তারা এই মামলার সকল আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসি কার্যকর করার জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ৪ জুলাই মানিকছড়ি উপজেলার ঘোরখানা এলাকা থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে শাহানশাহ হক ভান্ডারী সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মো. সোহেলকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। পরে অপহরণকারীরা সোহেলের নানার কাছে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর গত ১৬ জুলাই উপজেলার বাটনাতলী ইউনিয়নের ছদুরখীল ওয়ার্ডের দুর্গম বুদংপাড়া এলাকার একটি ছড়া থেকে সোহেলের হাত-পা বাঁধা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মূল পরিকল্পনাকারীসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
What's Your Reaction?






