কাপ্তাইয়ে ঐতিহ্যবাহী মারমা রীতিতে সাইমং–মাচিং দম্পতির শুভ বিবাহ সম্পন্ন
রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে মারমা জনগোষ্ঠীর প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রীতি মেনে মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হলো সাইমং মারমা ও মাচিং মারমার শুভ বিবাহ—যা স্থানীয় মারমা ভাষায় ‘মেয়াপোয়ে’ নামে পরিচিত।
কাপ্তাইয়ের বড়ইছড়ি মারমা পাড়ার স্বর্গীয় চিংসানু মারমার পুত্র সাইমং মারমা ও খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার নোয়াপাড়া–কালাপানি এলাকার চিংসাঅং মারমার কন্যা মাচিং মারমার এই পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হন।
দিনভর অনুষ্ঠিত এই আনন্দঘন উৎসবে হিন্দু, মুসলিম ও পাহাড়ি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সৌহার্দ্যপূর্ণ মিলনমেলায় অংশ নেন। প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি অতিথির উপস্থিতিতে পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।
বিবাহের দিন বর ও কনের বাড়িতে ছিল উৎসবের বিশেষ আমেজ। মারমা রীতিনীতি অনুযায়ী ভোরে বিন্নি চালের ভাত খাওয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর ভান্তেদের (বৌদ্ধ ভিক্ষু) মাধ্যমে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়।
মারমা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক রীতি ‘চুং-মাং-লে’ বা ‘গংউ নাইট’ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়, যা বিবাহের পূর্বশর্ত হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। এই রীতির মাধ্যমে নবদম্পতি সমাজে একসঙ্গে বসবাস ও পরিবার গঠনের অধিকার লাভ করেন।
নবদম্পতি সাইমং মারমা ও মাচিং মারমা একে অপরের হাত ধরে নতুন জীবনের পথচলা শুরু করেন। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা তাদের সারাজীবনের শান্তি, সুখ, সমৃদ্ধি ও সুন্দর দাম্পত্য জীবনের জন্য আন্তরিক শুভকামনা জানান।
কাপ্তাইবাসীর পক্ষ থেকেও নবদম্পতির প্রতি রইল অগাধ ভালোবাসা, সম্মান ও সৌহার্দ্যের শুভেচ্ছা।
What's Your Reaction?
রিপন মারমা, কাপ্তাই প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটিঃ