সৎ, নীতি ও আদর্শবান প্রার্থীকে দেশের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ দিন - মাসুদ সাঈদী

পিরোজপুর-১ আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী, আল্লামা সাঈদী পুত্র এবং সাবেক সফল উপজেলা চেয়ারম্যান জননেতা মাসুদ সাঈদী বলেছেন, "নির্বাচন এলেই বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে, জনগণের সাথে প্রতারণা করে। জন-প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে তারা সাধারণ মানুষকে ভুলে যায়, এলাকার সাথে যোগাযোগ রক্ষা না করে নিজেদের ফায়দা লোটে। আপনারা এমন প্রার্থীকে ভোট দিন যাকে সবসময় আপনার পাশে পাবেন, যিনি আপনাদের ভোটের মূল্য দিতে পারবেন। সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সৎ, নীতি ও আদর্শবান প্রার্থীকে দেশের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ দিন। আপনারা তাকেই ভোট দিন যিনি জনগণের আমানত রক্ষা করতে পারবেন।"

বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় পাড়েরহাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ১নং পাড়েরহাট ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে ভোট কেন্দ্র প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাসুদ সাঈদী বলেন, "আল্লামা সাঈদীর নামে মিথ্যা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার নামে যে ভাওতাবাজি, ছলচাতুরী ও মিথ্যা নাটক সাজিয়ে তাকে কারাগারে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছিল এবং ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট চিকিৎসার নামে তাকে হত্যা করা হয়েছে, এই অপরাধের প্রতিদানস্বরূপ স্বয়ং আল্লাহ পরের বছর একই মাসের ৫ আগস্ট তাদেরকে ক্ষমতার মসনদ থেকে ছুড়ে হাসিনা ও তার দোসরদের ক্ষমতাচ্যুত করে ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছেন। আল্লাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি ছাড় দেন, কিন্তু ছেড়ে দেন না।"

উপজেলা নির্বাচনের সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, "উপজেলা নির্বাচনের সময় আল্লামা সাঈদীর মিথ্যা মামলা ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আমি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। মামলা সংক্রান্ত কাজে নানা ব্যস্ততা থাকায় জিয়ানগরবাসীর ভোটারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে পারিনি। তারপরেও আল্লামা সাঈদী ও তার পরিবারের প্রতি ভালোবাসার প্রতিদানস্বরূপ জিয়ানগরের হাজার হাজার ভোটার আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে আমার ও আমার পরিবারের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন। আমি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আপনাদের আমানত রক্ষা করার চেষ্টা করেছি, নিজেকে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করেছি। আপনারা যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন তাহলে আমি আপনাদের সেবা করার সুযোগ চাই, আপনাদের পাশে থেকে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই এবং আল্লামা সাঈদীর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে চাই।"

আল্লামা সাঈদীর প্রতি অবিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ট্রাইব্যুনালে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষের ৪৮ জনকে মিথ্যা সাক্ষী দিতে বাধ্য করা হয়েছিল, যা তারা নিজেদের মুখে স্বীকার করেছে, এ ব্যাপারে আপনারা সবাই অবগত আছেন। অপরদিকে আমাদের পক্ষে যে ১৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছিল তাও তারা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। এই ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে সুখরঞ্জন বালি নামের সাক্ষী মিথ্যা সাক্ষী দিতে রাজি না হওয়ায় এবং সত্য প্রকাশ করতে চাওয়ায় তাকে সাক্ষী দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে অপহরণ করে বছরের পর বছর ভারতের কারাগারে বন্দি করে রেখেছিল, তবুও তিনি নীতিতে অটল ছিলেন। সুখরঞ্জন বালি বিধর্মী হয়েও আল্লামা সাঈদীর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন। আল্লামা সাঈদী ও তার পরিবার যদি সৎ, নীতি, আদর্শবান ও দুর্নীতিমুক্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনারা সেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন। ভোটের মাধ্যমে আপনাদের ভালোবাসার প্রতিদান পেতে চাই।"

পাড়েরহাট ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী আমির মাওলানা মোঃ ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে ও ইউনিয়ন সেক্রেটারি মো. জালাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মো. জহিরুল হক, উপজেলা আমির মাওলানা মো. আলী হোসেন, সাবেক উপজেলা আমির মাও. হাবিবুর রহমান, উপজেলা সেক্রেটারি তৌহিদুর রহমান রাতুল সহ জামায়াতের জেলা, উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও সুধীজন।