নোয়াখালীতে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, রণক্ষেত্র কাশেম বাজার

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেম বাজারে একটি মসজিদভিত্তিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার কারণ হিসেবে উভয় পক্ষই পরস্পরকে দোষারোপ করেছে। নোয়াখালী জেলা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ফজলে রাব্বীর অভিযোগ অনুযায়ী, শনিবার কাশেম বাজার জামে মসজিদে তাদের আয়োজিত দারসুল কুরআন অনুষ্ঠানে যুবদলের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এর প্রতিবাদে রোববার আসরের নামাজের পর আবারও একই স্থানে কুরআন তালিমের আয়োজন করা হলে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দ্বিতীয় দিনের মতো হামলা চালায়। তিনি দাবি করেন, হামলাকারীরা মসজিদে তালা মেরে তাদের ২৫ জন নেতাকর্মীকে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। আহতদের উদ্ধারের জন্য আসা অ্যাম্বুলেন্সও ফেরত পাঠানো হয় বলে তিনি জানান। গুরুতর আহতদের মধ্যে নোয়াখালী শহর শিবিরের অফিস সম্পাদক তানভীর সিয়াম এবং আইন সম্পাদক নাঈম হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
অপরদিকে, স্থানীয় বিএনপি নেতারা ছাত্রশিবিরের এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তাদের মতে, আসরের নামাজের পর শিবিরের কর্মীরা মসজিদের ভেতরে ব্যানার টানিয়ে দলীয় স্লোগান দিয়ে কার্যক্রম শুরু করলে মুসল্লি ও বিএনপির নেতাকর্মীরা বাধা দেন। তখন শিবির কর্মীরাই প্রথমে তাদের ওপর হামলা চালায়। এই হামলায় ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে বিএনপি নেতারা দাবি করেন। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ইউনিয়ন বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. আক্তার ও দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর রয়েছেন।
খবর পেয়ে সুধারাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, "খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।" এই ঘটনায় কাশেম বাজারসহ আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় জামায়াত-শিবির জেলা শহর মাইজদীতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
What's Your Reaction?






