রুমায় বিএনপি নেতার মাধ্যমে প্রতারণা: জুমচাষীদের ২৩ হাজার টাকারও বেশি হারানোর অভিযোগ

রুমা প্রতিনিধি
Jul 27, 2025 - 21:20
 0  2
রুমায় বিএনপি নেতার মাধ্যমে প্রতারণা: জুমচাষীদের ২৩ হাজার টাকারও বেশি হারানোর অভিযোগ

বান্দরবানের রুমা উপজেলার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের দুর্গম বাগান পাড়া ও পুনর্বাসন পাড়ার ৩০ জন নিরীহ জুমচাষী এবং এক পোল্ট্রি ব্যবসায়ী ‘ত্রাণ সহায়তা’ দেয়ার নামে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা আবু মার্মার মাধ্যমে চক্রটি এই প্রতারণা চালায় বলে জানা গেছে। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, ১৬ জুলাই স্থানীয় বিএনপি নেতা আবু মার্মা পাড়াবাসীদের জানান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের জন্য ত্রাণ সহায়তা আসছে। প্রতিজনকে ৬৫০ টাকা করে দিলে তারা নগদ ৪২০০ টাকা, ৩০ কেজি চাল, ২ লিটার তেল ও ১ কেজি লবণ পাবেন বলে জানান তিনি।

আবু মার্মার কথায় বিশ্বাস করে বাগান পাড়া ও পুনর্বাসন পাড়ার ৩০ জন ব্যক্তি ৬৫০ টাকা করে মোট ১৯,৫০০ টাকা জমা দেন। ১৭ জুলাই সকালে তাদের রুমা বাজারে গিয়ে ত্রাণ নিতে বলা হয়। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে প্রতারকের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

স্থানীয়রা জানান, আবু মার্মা আরও ৪,২০০ টাকা বিকাশে পাঠান, প্রতারক চক্রের দাবি অনুযায়ী বাড়তি ত্রাণ সামগ্রীর খরচ বাবদ। এতে দুই দফায় তার মাধ্যমে মোট ২৩,৭০০ টাকা পাঠানো হয়।

একইভাবে ১৬ জুলাই রুমা বাজারের এক পোল্ট্রি ব্যবসায়ী এবং যুবদল নেতা রতন কর্মকার ১০,২০০ টাকা হারান। স্থানীয় যুবদল নেতা অংবাচিং মার্মার দেওয়া এক মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে তিনি একইভাবে প্রতারণার শিকার হন।

বিএনপির স্থানীয় নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা মোবাইল নম্বরটি পেয়েছিলেন প্রতারক চক্রের কাছ থেকে, যারা নিজেদের বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়েছিল। তবে রুমা থানচি এলাকার বিএনপি নেতা হামলাই ম্রো দাবি করেছেন, তিনি আবু মার্মাকে চেনেন না এবং কাউকে টাকা দিতে বলেননি।

এ বিষয়ে গালেঙ্গ্যা ইউপি সদস্য ঙানরাউ ম্রো ও যুবদল নেতা কোকো সিং মার্মা ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। তবে তাঁরা কেউই প্রতারণায় টাকা নেওয়ার দায় স্বীকার করেননি।

অগ্রবংশ অনাথালয়ের পরিচালক উঃ নাইন্দিয়া ভিক্ষু বলেন, “দুর্গম এলাকার নিরীহ মানুষের কাছ থেকে লোভ দেখিয়ে টাকা নেওয়া চরম অন্যায়। টাকা ফেরত দেওয়া উচিত।”

রুমা থানার এসআই টিটু সরকার জানান, অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রতারকদের শনাক্ত করে টাকা উদ্ধার সম্ভব হতে পারে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow