বিজয়ীর মানসিকতা নিয়ে আগামী নির্বাচনে মাঠে নামতে হবে: মির্জা ফখরুল
রাজনৈতিক পরিবর্তনের নতুন অধ্যায় রচনার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে সম্পূর্ণভাবে জয়লাভ করতে হবে। অনেক বাধা-বিপত্তি সামনে আসবে, বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রচারণা চলবে—তবু মাথা উঁচু করে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। বিএনপি কোনো দিন পরাজিত হয়নি, পরাজিতও হবে না; কারণ বিএনপি জনগণের দল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী দল। দলের সাফল্য আনতে পারে কেবল ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী আদর্শ।
বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটগুলোর এক হাজারের বেশি নেতা এতে অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রতিনিধিত্বশীল সংসদ এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এসেছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যাওয়ার এই নেতৃত্বে থাকবেন তারেক রহমান।
তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে পেছনে টেনে নেওয়ার অপশক্তির বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়তে হবে। সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তিকে জয়ী করতে সংগঠনের প্রতিটি কর্মীকে দৃঢ় মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগ আমলের নির্বাচন নয়। এটি হতে হবে সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ নির্বাচন। বিজয় অর্জন করতে হলে জনগণের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। মানুষের মন জয় করে তাদের ভোটকেন্দ্রে আনতে হবে, ধানের শীষের পক্ষে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
মনোনয়ন নিয়ে দলে কে পেলেন বা কে পেলেন না—তা নিয়ে এখন ভাবিত হওয়ার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে, জনগণের সামনে বিএনপি কী দেবে, কোন পরিকল্পনা নিয়ে এগোবে—সেটিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তরুণ নেতৃত্বের এক নতুন রাজনৈতিক দলের সমালোচনার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নাকি সংস্কার করে না—এটি ভিত্তিহীন। জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে মুক্ত গণমাধ্যমের উন্মোচন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, খালেদা জিয়ার সময়ে নারী শিক্ষা, যুবকদের কর্মসংস্থান ও আধুনিক অর্থনীতি—সবই বিএনপির যুগান্তকারী সংস্কারের উদাহরণ।
তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরের লড়াই এখন শেষ প্রান্তে। এই লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই বিএনপিকে সরকার গঠন করাতে হবে। তারেক রহমান ইতোমধ্যেই দেশের সামনে নতুন পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। জনগণের মাঝে সেই পরিকল্পনা পৌঁছে দিতে পারলে ধানের শীষের জয় অনিবার্য।
দেশে নতুন করে কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে কি না—সেটি নিয়েও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে বলেন।
তারেক রহমান খুব শিগগির দেশে ফিরবেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি দেশে পা রাখার দিন যেন গোটা বাংলাদেশ কেঁপে ওঠে; সেই দিন বাংলাদেশের রাজনৈতিক মানচিত্র বদলে দিতে চায় বিএনপি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং সঞ্চালনা করেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। উপস্থিত ছিলেন দলের নানা স্তরের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, কর্মসংস্থানসহ আটটি খাতে কীভাবে কাজ করবে—এ বিষয়ে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জন্য ধারাবাহিক কর্মশালা ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ওলামা দলসহ অন্যান্য সংগঠন অংশ নেবে। এরপর বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের বাইরে নির্ধারিত আরেক দিনে হবে সমাপনী অনুষ্ঠান।
What's Your Reaction?
অনলাইন ডেস্কঃ