কুবিতে শাফায়েতের হামলায় প্রত্নতত্ত্ব–মার্কেটিং বিভাগের খেলা স্থগিত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে মার্কেটিং বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাফায়েত রহমানের হামলার ঘটনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের ১৩ মিনিটে এই ঘটনা ঘটে। পরে খেলার ফলাফল ছাড়াই গোল শূন্য ম্যাচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া কমিটি স্থগিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ম্যাচ চলাকালীন গোলকিপারের বল ধরাকে কেন্দ্র করে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে মার্কেটিং বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শাফায়াত রহমান মাঠের বাইরে থেকে দৌড়ে এসে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের গোলকিপার হাসমত আলীর ওপর আক্রমণ করেন। এতে মাঠে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে এবং দুই বিভাগের খেলোয়াড় ও দর্শকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
তারা আরও বলেন, নিয়মবহির্ভূতভাবে শাফায়েত যদি মাঠে প্রবেশ না করতেন এবং খেলোয়াড়দের আঘাত না করতেন, তবে এমন সংঘর্ষ হতো না।
এর আগে প্রথমার্ধে একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধিনায়ক শাহিনুল ইসলাম গালিব ও মার্কেটিং বিভাগের অধিনায়ক মুজিবুর রহমানের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয় এবং খেলা কিছু সময় বন্ধ থাকে। পরে ক্রীড়া কমিটি ও উপস্থিত শিক্ষকরা বিষয়টি মীমাংসা করেন ও পুনরায় খেলা শুরু হয়।
এ ঘটনায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসমত আলী এবং ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বরকত উল্লাহ আহত হন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহত শিক্ষার্থী হাসমত আলী বলেন, "আমি বল ধরার পর হঠাৎ কয়েকজন আমাকে ঘিরে ফেলে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাঠের বাইরে থেকে এসে এক শিক্ষার্থী আমাকে মারতে শুরু করে।"
আরেক আহত শিক্ষার্থী বরকত উল্লাহ বলেন, "পরিস্থিতি সামলাতে গেলে আমাকেও মারধর করা হয়। মাথায় একাধিক ঘুষি মারা হয়। আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।"
এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধিনায়ক শাহিনুল ইসলাম গালিব বলেন, "আমরা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষ থেকে হামলাকারীর বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেব। এছাড়া খেলার ফলাফল বিষয়ে ক্রীড়া কমিটির ঘোষিত সিদ্ধান্তকে মেনে নেব।"
মার্কেটিং বিভাগের অধিনায়ক মুজিবুর রহমান বলেন, "খেলা শুরুর পর থেকেই প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের খেলোয়াড়রা আক্রমণাত্মক আচরণ করছিল। দ্বিতীয়ার্ধে ফাউল নিয়ে তর্কের সময় দুই দলের দর্শক ও খেলোয়াড়দের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।"
তিনি আরও বলেন, "যেহেতু মাঠে খেলোয়াড়রা কোনো ধরনের ঝামেলায় যুক্ত ছিলো না তাই পুরো ঘটনার দায়ভার কোনোভাবেই টিমের নয়"
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া কমিটির আহ্বায়ক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, "শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার স্বার্থে আজকের বাকি খেলা স্থগিত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাফায়েত রহমানের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।
What's Your Reaction?
আলী আকবর শুভ, কুবি প্রতিনিধি, কুমিল্লাঃ