মাসুদ সাঈদীর প্রচেষ্টায় ৫০ শয্যায় উন্নীত ইন্দুরকানী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মোঃ নাজমুল হোসেন,জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুরঃ
Aug 21, 2025 - 21:34
 0  1
মাসুদ সাঈদীর প্রচেষ্টায় ৫০ শয্যায় উন্নীত ইন্দুরকানী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সকল জল্পনা-কল্পনা ও দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী (সাবেক জিয়ানগর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। আল্লামা সাঈদীপুত্র ও পিরোজপুর-১ আসনের জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদ সাঈদীর নিবিড় প্রচেষ্টায় এই কাঙ্ক্ষিত অনুমোদন মিলেছে। গত ২০ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, যা স্থবির হয়ে থাকা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে।

২০০৫ সালে পিরোজপুর-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ‘জিয়ানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’ নামে এই হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে নির্মিত ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ২০০৮ সালে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং বহির্বিভাগ চালু হয়।

তবে ক্ষমতার পালাবদলের পর হাসপাতালটির পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম আর আলোর মুখ দেখেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তৎকালীন সরকার হাসপাতালটির আবাসিক সেবা চালু করতে দেয়নি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে নামকরণ এবং এটি আল্লামা সাঈদীর নিজ উপজেলায় হওয়ায় হাসপাতালটি বহু বছর ধরে অবহেলিত ছিল।

২০১৭ সালে ‘জিয়ানগর’ উপজেলার নাম পরিবর্তন করে ‘ইন্দুরকানী’ রাখা হলে হাসপাতালটির উন্নয়নের জট কিছুটা খোলে। ২০১৮ সালে পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর উদ্যোগে এটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে প্রায় ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই অর্থে হাসপাতালের ভবন চার তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ, নতুন ভবন নির্মাণসহ আধুনিকায়নের কাজ হয়।

অবকাঠামো প্রস্তুত থাকলেও জনবল ও আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের অভাবে পূর্ণাঙ্গ ৫০ শয্যার কার্যক্রম এতদিন শুরু করা যায়নি। ২০২২ সালের অক্টোবরে ৩১ শয্যার আন্তঃবিভাগ উদ্বোধন করা হলেও এলাকাবাসীর পূর্ণাঙ্গ সেবা প্রাপ্তির অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হয়।

হাসপাতালটির এই দীর্ঘসূত্রিতা কাটাতে সম্প্রতি উদ্যোগ নেন আল্লামা সাঈদীপুত্র মাসুদ সাঈদী। তিনি স্বাস্থ্য বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ও তদবিরের মাধ্যমে চূড়ান্ত অনুমোদনের পথ সুগম করেন। তারই ফলস্বরূপ ৫০ শয্যার আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি হলো, যা এই অগ্রযাত্রার পেছনে তার ভূমিকাকে উল্লেখযোগ্য করে তুলেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, শয্যা সংখ্যা বাড়ায় এখন আরও বেশি রোগী ভর্তি করা যাবে এবং জরুরি সেবার মান বাড়বে। তবে এর জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি।

এ প্রসঙ্গে মাসুদ সাঈদী বলেন, "২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আমার পিতা শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রহ.)-এর হাত ধরে জিয়ানগর উপজেলা প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং এখানকার প্রায় সকল উন্নয়ন সাধিত হয়। পরবর্তীতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই উপজেলা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিল। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর আমি উন্নয়নবঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ শুরু করেছি। তারই প্রথম ধাপ হিসেবে জিয়ানগর (ইন্দুরকানী) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলো। শুধু স্বাস্থ্য খাত নয়, আমার নির্বাচনী এলাকার সকল বঞ্চিত মানুষের সার্বিক উন্নয়নে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।"

এই ঘোষণার পর থেকে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আরও উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা সেবা পাওয়ার নতুন আশা জেগেছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow