ভোট নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার কেন্দ্রে মাওলানা আকরাম আলী
ফরিদপুর-২ আসনে ইসলামী ও সমমনা ৮ দলীয় জোটের যৌথ জনসভায় দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় উঠেছে স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা শাহ মো. আকরাম আলী জনসভায় নিজের বক্তব্যে বলেন, “কেউ যদি ভোটের গায়ে হাত দিতে চায়, তার হাতের কব্জি কেটে দেওয়া হবে।” এই মন্তব্যের অংশটিই কেটে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করায় তার বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বাদ মাগরিব সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ছোট লক্ষণদিয়া খেলার মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রত্যেকেই ইসলামের সৈন্য।
দল–বেদল নির্বিশেষে সবাই ইসলামের পথে চলতে চাই। অন্যায়–অত্যাচার ও দুর্নীতিকে বিদায় জানিয়ে হক ও ন্যায়নীতির প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় খণ্ডিত ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে বিতর্ক স্থানীয় যুবক সাইফুল ইসলাম তার ফেসবুক ওয়ালে বক্তৃতার শুধুমাত্র “কব্জি কাটার” অংশটি পোস্ট করলে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। পোস্টটি ঘিরে অনেকে ধারণা করেন, বক্তা সহিংস উসকানি দিয়েছেন। তবে অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই বক্তব্যকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করে মাওলানা আকরাম আলীকে নেগেটিভভাবে প্রচার করা হয়েছে।
বিতর্ক তীব্র আকার ধারণ করলে সাইফুল ইসলাম পরবর্তীতে তার পোস্ট সংশোধন করে পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য আপলোড করেন।
এরপরও বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুঘটনাটি প্রকাশের পর থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
কেউ বক্তব্যটিকে অতিরঞ্জিত রাজনৈতিক ভাষণ বলে দাবি করছেন, কেউ আবার নির্বাচনী পরিবেশে এমন উক্তির প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তবে সমর্থকরা বলছেন, পুরো বক্তব্য শুনলে বোঝা যায় তিনি নির্বাচনী অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা বলেছেন, সহিংসতার আহ্বান নয়।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী ও সমমনা ৮ দলীয় লিয়াজো কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মাওলানা আবুল ফজল মুরাদ। পরিচালনা করেন মো. এজাজুল হক।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ফরিদপুর-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বকুল মিয়া, জামায়াতে ইসলামের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা সোহরাব হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা শাহ মো. জামাল উদ্দিন
এছাড়াও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সভায় বক্তব্য রাখেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মূল বক্তব্যে নতুন বিতর্ক শুধু একটি বাক্য কেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ফলে পুরো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে খণ্ডিত বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা নির্বাচনী মাঠে ভুল বোঝাবুঝি ও উত্তেজনা বাড়াতে পারে।
ফরিদপুর-২ আসনের ভোটারদের মধ্যেও এ বিষয়ে কৌতূহল ও আলোচনার শেষ নেই। বর্তমানে ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়া, স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ জনগণের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
What's Your Reaction?
শফিকুল ইসলাম জনি, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ