মানবতার সেবায় দুই কৃতি চিকিৎসকের পদোন্নতি
চিকিৎসা সেবায় নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব ও মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই কৃতি নারী চিকিৎসক—ডা. নাহিদ সুলতানা কমলা ও ডা. খাদিজা সিদ্দিক সুইটি।
বুধবার (২২ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে তাঁদের এই পদোন্নতির ঘোষণা দেওয়া হয়। খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই ময়মনসিংহ ও ফুলবাড়ীয়ায় বইতে থাকে আনন্দের জোয়ার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমজুড়ে শুভেচ্ছা আর অভিনন্দনের বন্যা দেখা যায়।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আছিম বাঁশদী গ্রামের কৃতি কন্যা ডা. নাহিদ সুলতানা কমলা শৈশব থেকেই মেধাবী, বিনয়ী ও সমাজসেবায় অনুপ্রাণিত ছিলেন। চিকিৎসাশিক্ষা শেষ করে তিনি গাইনী বিভাগে যুক্ত হন এবং নারীর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছেন নিষ্ঠার সঙ্গে।
প্রতি শুক্রবার তিনি নিজ গ্রামে গিয়ে গরিব ও অসহায় নারীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন।
ডা. কমলা বলেন, “চিকিৎসা শুধু একটি পেশা নয়, এটি এক মহান দায়িত্ব। রোগীর মুখের হাসিই আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার।”
স্থানীয়রা জানান, ডা. নাহিদ সুলতানা কমলা শুধু একজন চিকিৎসক নন, তিনি সমাজের এক আলোকবর্তিকা, যিনি মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
ডা. নাহিদ সুলতানা কমলার সহধর্মীণী ডা. আশিকুর রহমান নিজেও একজন কৃতি চিকিৎসক ও সমাজসেবক। চিকিৎসক দম্পতি এই দুইজন গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
ডা. আশিকুর রহমান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু রোগ নিরাময় নয়, মানুষকে সুস্থ জীবনের প্রতি সচেতন করা। ডা. কমলার সাফল্য মানবতার জয়।”
স্থানীয় সুশীল সমাজের ভাষায়, এই দম্পতি মানবিক সেবার মাধ্যমে সমাজে এক উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করেছেন।
একই প্রজ্ঞাপনে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান গাইনী বিভাগের নিবেদিত চিকিৎসক ডা. খাদিজা সিদ্দিক সুইটি। তিনি ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের কৃতি কন্যা।
তাঁর আন্তরিকতা, পেশাদারিত্ব ও রোগীর প্রতি মমত্ববোধ তাঁকে করে তুলেছে জনমানুষের প্রিয় চিকিৎসক।
সহধর্মীণী হিসেবে তাঁর পাশে আছেন ঝালকাঠির জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, যিনি নিজেও দক্ষ প্রশাসক ও মানবিক চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত।
ডা. হুমায়ুন কবীর বলেন, “সুইটির পদোন্নতি আমাদের পরিবারের জন্য যেমন গর্বের, তেমনি এটি সমাজের জন্যও এক প্রেরণা। একজন চিকিৎসক শুধু হাসপাতালেই নয়, মানবতার মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেন।”
স্থানীয়রা বলেন, ডা. হুমায়ুন কবীর ও ডা. খাদিজা সিদ্দিক সুইটি দম্পতি মানবসেবার অনন্য উদাহরণ।
ডা. নাহিদ সুলতানা কমলা–ডা. আশিকুর রহমান এবং ডা. খাদিজা সিদ্দিক সুইটি–ডা. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর—এই দুই চিকিৎসক দম্পতি সমাজে মানবিক চিকিৎসা ও সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁদের অবদান হাসপাতালের গণ্ডি ছাড়িয়ে গ্রামীণ স্বাস্থ্যসচেতনতা, মা ও শিশুস্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে সমানভাবে প্রশংসিত।
তাঁদের পদোন্নতির খবর ছড়িয়ে পড়তেই আছিম বাঁশদী, অনন্তপুর ও ফুলবাড়ীয়া জুড়ে শুরু হয় আনন্দের বন্যা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তার ঢল নামে।
ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন বলেন, “ডা. কমলা ও ডা. সুইটি শুধু চিকিৎসক নন, তাঁরা সমাজের আলোকবর্তিকা, মানবতার প্রতীক।”
ফুলবাড়ীয়া প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, “ডা. হুমায়ুন কবীর ও ডা. সুইটি দম্পতি সেবার এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যা অনুকরণীয়। আর ডা. আশিকুর রহমান ও ডা. কমলা দম্পতি আমাদের এলাকার গর্ব।”
ফুলবাড়ীয়া সমিতি ময়মনসিংহের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রশীদ তামান্না বলেন, “ডা. নাহিদ সুলতানা কমলা ও ডা. খাদিজা সিদ্দিক সুইটি নারী শক্তি, শিক্ষা ও মানবসেবার উজ্জ্বল প্রতীক।”
চিকিৎসা পেশায় নারীর অংশগ্রহণ আজ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ডা. নাহিদ সুলতানা কমলা ও ডা. খাদিজা সিদ্দিক সুইটি প্রমাণ করেছেন—মানবতা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা থাকলে নারীও সমাজে পরিবর্তনের আলো ছড়াতে পারেন। তাঁদের এই পদোন্নতি শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি ময়মনসিংহ ও ফুলবাড়ীয়ার মানুষের গর্ব এবং আগামী প্রজন্মের জন্য এক প্রেরণার বাতিঘর।
What's Your Reaction?
মোঃ শফিকুল ইসলাম, ফুলবাড়িয়া প্রতিনিধি, ময়মনসিংহঃ