‘মানবিক রশি’ টানিয়ে শীতার্তদের পাশে সাংবাদিক গামছা কাজল
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে তীব্র কনকনে শীতের কামড়ে যখন পদ্মাপাড়ের চরাঞ্চলের মানুষ চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছেন, তখন মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের সন্তান, সাংবাদিক ও জনপ্রিয় ফেসবুক–ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর আব্দুস সবুর মোল্লা ওরফে (গামছা কাজল)।
তিনি বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার চরভদ্রাসন প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি ‘Gamcha Kajol’ নামে তার ফেসবুক পেজে ১ লক্ষ ৯ হাজার এবং ইউটিউবে ৮ হাজারের বেশি অনুসারী যুক্ত আছেন। সামাজিক কনটেন্টের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করা এই মানুষটি এবার বাস্তব উদ্যোগের মাধ্যমে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ালেন।
চরাঞ্চলের অসহায় মানুষের কষ্ট দেখে নীরব থাকতে পারেননি তিনি। নিজের বাড়িতে থাকা পুরনো কিন্তু ব্যবহারযোগ্য কাপড় সংগ্রহ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে গুছিয়ে নেন। এরপর সেগুলো নিয়ে হাজির হন চরভদ্রাসন ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গী অস্থায়ী লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাট এলাকায়।
গতকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) তিনি ‘মানবিক রশি’ নামে একটি রশি টানিয়ে উন্মুক্তভাবে কাপড় ঝুলিয়ে রাখেন। যে যার প্রয়োজন অনুযায়ী বিনামূল্যে কাপড় নিয়ে যেতে পারবেন—এমন আহ্বান জানান তিনি। এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে মুহূর্তেই শীতার্ত মানুষের মুখে হাসি ফুটে ওঠে।
আব্দুস সবুর (গামছা কাজল) মোল্লার বাড়ি চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গী (হিন্দু) গ্রামে। তার এই মানবিক উদ্যোগ ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। নেটিজেনরা বলছেন, এমন উদ্যোগ সমাজে মানবিকতার নতুন আলো জ্বালায়।
এ বিষয়ে আব্দুস সবুর মোল্লা দৈনিক খোলাচোখ-কে জানান, “আমি প্রতিবছরই আমার সাধ্যমতো এই কাজটি করি। এবার সকালে প্রায় ৭৫ পিস পুরনো কাপড় ঝুলিয়েছিলাম। বিকালে এসে দেখি একটি কাপড়ও নেই—যার যেমন প্রয়োজন সবাই নিয়ে গেছে। বিষয়টি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। এই তীব্র শীতে বিত্তবানদের উচিত অসহায় শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো।”
ঘাটের দোকানদার মোজাফফর হোসেন জানান, “সকালে অনেকগুলো কাপড় নিয়ে এসে রশিতে টাঙিয়ে রেখে যান সাংবাদিক গামছা কাজল। বিকেল হওয়ার আগেই দেখলাম অসহায় মানুষ যার যেটা পছন্দ, নিয়ে গেছে।”
শীতের এই দুঃসময়েই আব্দুস সবুর কাজলের ‘মানবিক রশি’ যেন সত্যিকারের মানবতার এক উজ্জ্বল প্রতীক হয়ে উঠেছে।
What's Your Reaction?
আসলাম বেপারি, চরভদ্রাসন প্রতিনিধি, ফরিদপুরঃ