তীব্র হামলা-পাল্টা হামলায় কাঁপছে ইউক্রেন-রাশিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আসন্ন বৈঠকের ঠিক আগমুহূর্তে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার সংঘাত নতুন করে তীব্র আকার ধারণ করেছে। রোববার ফ্লোরিডায় দুই নেতার মুখোমুখি হওয়ার কথা থাকলেও, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় দুই দেশই একে অপরের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে।
রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ এক বিবৃতিতে জানায়, গত এক দিনে রাশিয়া রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এসব হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। একই সঙ্গে আর্টিলারি ও রকেট হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন বসতি ও অবস্থানে চার হাজারের বেশি গোলাবর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কিয়েভ।
ইউক্রেনীয় বাহিনীর দাবি, পাল্টা প্রতিরোধে গত ২৪ ঘণ্টায় রুশ বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিয়েভের তথ্যমতে, এ সময়ে রাশিয়ার প্রায় ১,২০০ সেনা হতাহত হয়েছে। এছাড়া ধ্বংস করা হয়েছে ৫টি ট্যাংক, ১৯টি সাঁজোয়া যান, ৩৩টি আর্টিলারি ব্যবস্থা, ২০৫টি ড্রোন এবং দেড় শতাধিক সামরিক যান।
অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের দিক থেকে আসা বড় ধরনের ড্রোন হামলা প্রতিহত করেছে। রুশ কর্তৃপক্ষের দাবি, সারাতোভ, ভোরোনেজ, রোস্তভ, বেলগোরোদ, ভলগোগ্রাদ অঞ্চল এবং ক্রিমিয়ার আকাশসীমায় ইউক্রেনের ৬২টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
শান্তির বার্তা ও ট্রাম্পের উদ্যোগ
রণক্ষেত্রে যখন এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি, তখন ওয়াশিংটন থেকে কিছুটা আশার বাণী শোনা যাচ্ছে। ‘নিউইয়র্ক পোস্ট’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে শান্তি চুক্তি এখনো সম্ভব। তিনি বলেন, “রাশিয়া সমঝোতায় আগ্রহী এবং এখনো অগ্রগতির সুযোগ আছে।” তবে তিনি স্বীকার করেন, তাঁর নিজের উদ্যোগে সমাধান করতে চাওয়া সংঘাতগুলোর মধ্যে এটিই সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
ফ্লোরিডায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক
হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করেছে, রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার পাম বিচে অবস্থিত ট্রাম্পের মার-এ-লাগো রিসোর্টে দুই নেতার এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, বৈঠকে তিনি ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তবে বৈঠকের বিস্তারিত আলোচ্যসূচি বা কাঠামো সম্পর্কে হোয়াইট হাউস থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
বিশ্ববাসী এখন তাকিয়ে আছে রোববারের এই বৈঠকের দিকে—যুদ্ধক্ষেত্রের বারুদগন্ধী পরিস্থিতির মধ্যে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির এই আলোচনা কোনো শান্তির পথ দেখাতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
What's Your Reaction?
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ