শ্রীনগরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সিঙ্গাপুর প্রবাসীর ৬৫ লাখ টাকা ছিনতাই
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে এক প্রবাসীর কাছ থেকে ৬৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৭ জনকে আটক করা হয়েছে । প্রাথমিক অবস্থায় আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
জানা যায়, শনিবার (৮ নভেম্বর) বলপূর্বক সম্পত্তি ছিনিয়ে নেয়াসহ আরও কয়েকটি ধারায় শ্রীনগর থানায় অজ্ঞাতনামা ৮-৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী সিঙ্গাপুর প্রবাসী আকাশ অসীম (৪৮) দোহার উপজেলার পালামগঞ্জ এলাকার মৃত অনিল চন্দ্র দাসের ছেলে।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান মামলা ও আটকের বিষয়টি তথ্য নিশ্চিত করে তিনি জানান, আটককৃতদের খুব দ্রুতই থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরবর্তীতে তাদের নাম-পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়ীখাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগী আকাশ অসীম ও তার বড় ভাই বিমল চন্দ্র দাস হরি (৫৬) স্থানীয়ভাবে ভাঙারী স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছিলেন। গত ৬ নভেম্বর তারা মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর বাজারের ‘শ্রীনগর স্বর্ণালয়’ নামের দোকানদার রাজীব দাসের কাছে ২১ ক্যারেটের ৩৯ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করেন। পরদিন শুক্রবার ভোর সকালে স্বর্ণ বিক্রির ৬৫ লাখ টাকা নগদ গ্রহণের পর তারা সিএনজি চালিত অটোরিকশায় জয়পাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
পথে সকাল আনুমানিক ৭টা ১০ মিনিটে উপজেলার রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের তিন দোকান বাজার এলাকায় পৌঁছলে নাম্বারবিহীন একটি সাদা মাইক্রোবাস তাদের অটোরিকশার গতিরোধ করে। গাড়ি থেকে নেমে ৮-৯ জন ব্যক্তি নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন এবং বলেন, তাদের নামে মামলা রয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, হামলাকারীদের একজনের গায়ে “ডিবি” লেখা জ্যাকেট ছিল এবং কোমরে অস্ত্র ঝুলছিল। তারা আইডি কার্ড দেখতে চাইলে ওই ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা দুই ভাইকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। একপর্যায়ে তাদের কাছ থেকে স্বর্ণ বিক্রির ৬৫ লাখ টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয় এবং দুজনের হাতকড়া পরিয়ে হাইয়েস মাইক্রোবাসে তুলে ফেলে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা আকাশ অসীমের কাছ থেকে একটি ইনফিনিক্স মোবাইল (মূল্য ৩০ হাজার টাকা) ও তার ভাইয়ের কাছ থেকে একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোন (মূল্য ২০ হাজার টাকা) ছিনিয়ে নেয়। এরপর আকাশ অসীমকে পদ্মা সেতুর উত্তর প্রান্তের পুরাতন ফেরিঘাটে ফেলে দেয় এবং তার ভাইকে নিয়ে মাওয়ার দিকে চলে যায়। প্রায় ১০-১৫ মিনিট পর বিমল চন্দ্র দাসকেও পদ্মা সেতু টোলপ্লাজার কাছে ফেলে যায় তারা।
অভিযুক্তদের বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে এবং সবাই স্থানীয় উপভাষায় কথা বলছিল বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।
এ বিষয়ে জানতে ভুক্তভোগী আকাশ অসীমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
What's Your Reaction?
এমএ কাইয়ুম মাইজভাণ্ডারী, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জঃ