চরভদ্রাসনে বাল্কহেড থেকে পড়ে নিখোঁজ সুকানীর মরদেহ ৬ দিন পর উদ্ধার
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদীতে বাল্কহেড থেকে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার ছয় দিন পর সুকানী আরিফ হোসেনের (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে নদীর পাড়ে একটি গাছের ডালের সঙ্গে আটকে থাকা অবস্থায় তার মরদেহটি পাওয়া যায়।
নিহত আরিফ হোসেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শৈলমারী গ্রামের মৃত মজিবার শেখের ছেলে। তিনি দুর্ঘটনাকবলিত বাল্কহেডটিতে সুকানীর দায়িত্বে ছিলেন।
সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের টিলার চর এলাকায় কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত বাল্কহেড থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যান আরিফ। সহকর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিস ও ফরিদপুর থেকে আসা ডুবুরি দল যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। তবে নদীর প্রায় ৩৮ ফুট গভীরতা, তীব্র স্রোত এবং প্রচণ্ড শীতের কারণে উদ্ধারকাজে বাধার সৃষ্টি হয়।
চরভদ্রাসন ফায়ার স্টেশনের মাস্টার মুর্তজা ফকির জানান, "নিখোঁজ ব্যক্তির সঠিক অবস্থান শনাক্ত করতে না পারা এবং অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে মরদেহ ভেসে উঠতে সময় নিয়েছে। আমাদের ডুবুরি দল ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়েছেন।"
অবশেষে নিখোঁজের ছয় দিন পর মঙ্গলবার সকালে নিহতের ছোট ভাই তারেক নদীর পাড়ে একটি গাছের ডালের সঙ্গে ভাইয়ের মরদেহ আটকে থাকতে দেখেন। পরে তিনি ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেন।
মরদেহ উদ্ধারের সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) যায়েদ হোসাইন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
চরভদ্রাসন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, "নৌ-পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে। নিহতের ভাই থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা দায়ের করেছেন। সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।"
নিহত আরিফ হোসেন স্ত্রী, এক কন্যা ও দুই পুত্র সন্তান রেখে গেছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে স্বজনদের মাঝে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
What's Your Reaction?
আসলাম বেপারি, চরভদ্রাসন প্রতিনিধি, ফরিদপুরঃ