মাগুরায় নবমতি সাহিত্য পরিষদের বর্ণাঢ্য প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: পিঠা উৎসব ও র্যালিতে গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া
পৌষের সোনালি রোদ, শীতের নির্মল বাতাস আর গ্রামীণ উৎসবের আমেজে মাগুরার মহম্মদপুরে উদযাপিত হলো ‘নবমতি সাহিত্য পরিষদ’-এর অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) উপজেলার নহাটা ইছামতি বিল সংলগ্ন মহিষখোলা প্রাঙ্গণে এ উপলক্ষে আয়োজিত হয় বর্ণাঢ্য র্যালি ও ঐতিহ্যবাহী শীতকালীন পিঠা উৎসব। দিনভর এই আয়োজনকে ঘিরে পুরো এলাকা পরিণত হয় মানুষের এক মিলনমেলায়।
ইছামতি বিলের কোলে আয়োজিত এই উৎসবের মূল লক্ষ্য ছিল গ্রামবাংলার হারিয়ে যেতে বসা পিঠা সংস্কৃতি ও লোকজ ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবন। আধুনিকতার স্রোতে নতুন প্রজন্ম যাতে নিজেদের শেকড় ভুলে না যায়, সেই প্রয়াস থেকেই নবমতি সাহিত্য পরিষদ এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করে। পাশাপাশি পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় পাখিদের অভয়ারণ্য তৈরির লক্ষ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টির কর্মসূচিও পালন করা হয়।
দুপুর গড়াতেই উৎসব প্রাঙ্গণে ঢল নামে নানা বয়সী মানুষের। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রবীণদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মহিষখোলা প্রাঙ্গণ। বিলের ধার ঘেঁষে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে উৎসুক জনতার উপস্থিতি উৎসবে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী সব পিঠার স্টলগুলো ভোজনরসিকদের ভিড়ে হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।
অনুষ্ঠানে আয়োজকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. শাহজাহান মিয়া, মো. হাবিবুল্লাহ, প্রভাষক ইলিয়াস হোসেন, শিক্ষক আব্দুস সালাম এবং প্রধান শিক্ষক মো. মশিউর রহমানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
নবমতি সাহিত্য পরিষদের সদস্যরা জানান, এই আয়োজন কেবল বিনোদনের জন্য নয়, বরং এটি লোকজ সংস্কৃতির চর্চা এবং সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করার একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস। পিঠার স্বাদ আর বিলের ধারের নির্মল বাতাসে এই উৎসব যেন গ্রামবাংলার চিরচেনা হৃদস্পন্দনকেই নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে।
What's Your Reaction?
বিশ্বজিৎ সিংহ রায়, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, মাগুরাঃ