নওগাঁর আত্রাইয়ে ইটভাটা বন্ধের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
চলতি মৌসুমে সরকারি নির্দেশনায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধের সিদ্ধান্তের পর, কাজ হারানোর আশঙ্কায় নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় মানববন্ধন করেছে ইটভাটা শ্রমিক ও মালিক সমিতি। কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ ও হাজারো শ্রমিকের জীবন-জীবিকা রক্ষায় ইটভাটা পরিচালনার অনুমতি চেয়ে বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মো. আশাদুল ইসলাম বাবুর সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদ প্রধান ফটকের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়।
ইটভাটা মালিক সমিতির আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় কর্মরত বিপুল সংখ্যক শ্রমিক অংশ নেন। তারা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান যে, ইটভাটা বন্ধ করা হলে তাদের পরিবার-পরিজনসহ কর্মজীবন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। মানববন্ধন শেষে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নূরে আলম সিদ্দিক-এর বরাবর ইটভাটা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, চলতি মৌসুমের ইটভাটা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৬০–৭০ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে। এই অর্থ ইট প্রস্তুতের কাঁচামাল, শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও জমি ভাড়াসহ প্রাথমিক প্রস্তুতিতে ব্যয় হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রশাসনের নির্দেশে ইটভাটার কাগজপত্র ও লাইসেন্স পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, যদি এই মুহূর্তে ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়, তবে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ অসম্ভব হবে এবং লক্ষ লক্ষ টাকার কাঁচামাল নষ্ট হবে। পাশাপাশি, গ্রামের বিশাল সংখ্যক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে এবং তাদের পরিবার-পরিজনের জীবন-জীবিকা চরম সংকটে পড়বে। বহু বছর ধরে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা এই শিল্প বন্ধ হলে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে চলতি মৌসুমে ইটভাটা পরিচালনার অনুমতি প্রদানের জন্য জোর আবেদন করা হয়।
আত্রাই ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নিয়ামত আলী বাবু বলেন, “আমরা সরকারের সকল আইন মেনে ইটভাটা চালাতে বদ্ধপরিকর। কোনো ভাটা নিয়ম অমান্য করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু ঢালাওভাবে ইটভাটা বন্ধ করলে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ হারাবে, যা তাদের এবং তাদের পরিবারের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করবে। আমাদের আবেদন, সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করে চলতি মৌসুমের জন্য ভাটা পরিচালনার অনুমতি দিন।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন, আত্রাই ইটভাটা মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মীর সামসুল হুদা, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. মমিনুল মিঠু, সদস্য মো. নাজমুজ্জামান ভূট্র, সদস্য শহিদুল ইসলাম শহিদ প্রমুখ। তারা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপির বিষয়টি দ্রুত বিবেচনা করে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান রক্ষার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান।
What's Your Reaction?
আব্দুল মজিদ মল্লিক, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁঃ