বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা, আসামি ৮৭৬
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এসব মামলা দায়ের করা হয়। দুই মামলায় মোট আসামি করা হয়েছে ৮৭৬ জন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর বিকেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামপন্থী ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ভাঙচুর, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ, মারধর ও বিএনপি অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় খন্দকার নাসিরুল ইসলাম গ্রুপের পক্ষে উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুকে প্রধান আসামি করে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। অন্যদিকে, শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের পক্ষে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবর রহমান বাবু বাদী হয়ে খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে ১ নম্বর আসামি করে ১৮৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন।
মামলার বিষয়ে সাবেক সাংসদ ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি তখন ঘটনাস্থল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে মধুখালী উপজেলায় একটি অনুষ্ঠানে ছিলাম। ঘটনায় সালতার বাচ্চু রাজাকার ও বিএন এমএর শাহ্ জাফর জড়িত। তারা দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুর-১ আসন নিয়ে ষড়যন্ত্র করে আসছে।”
অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও মনোনয়নপ্রত্যাশী শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু বলেন, “নাসির একজন সন্ত্রাসী। সে কখনো বিএনপিকে ভোট দেয়নি, বরং ইগল প্রতীকে নির্বাচন করেছে। তার নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী বাহিনী ৭ নভেম্বর তান্ডব চালিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ভাঙচুর করেছে।”
জনতা পার্টির ১ নম্বর উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, “সংঘর্ষে আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমি দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে দূরে ছিলাম এবং ঘটনাস্থলেও ছিলাম না। তবুও আমার নাম মামলায় জড়ানো হয়েছে—এটি দুঃখজনক। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, “বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
What's Your Reaction?
এমএম জামান, বোয়ালমারী প্রতিনিধি, ফরিদপুরঃ