শহীদ স্মরণ ও বিজয়োল্লাসে মুখর মাগুরা: জেলাজুড়ে গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত
শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং ছাত্র-জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তির উল্লাসে মঙ্গলবার মুখর ছিল মাগুরা। 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস' উপলক্ষে জেলা শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপজেলায় দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিজয় মিছিল, শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সমাবেশ, কবর জিয়ারত ও বিশেষ দোয়ার মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়।
দিনের কর্মসূচি শুরু হয় এক আবেগঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের বরুনাতৈল গ্রামে শহীদ মেহেদী হাসান রাব্বীর কবর জিয়ারত করা হয় এবং জেলার দশ শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
পরে জেলা অডিটোরিয়ামে শহীদ পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে এক সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, সিভিল সার্জন ডা. শামীম কবিরসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোও দিনটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করে। বেলা ১১টার দিকে জেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শহরে পৃথক পৃথক বিজয় মিছিল বের করে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ ও সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খানের নেতৃত্বে আয়োজিত মিছিলে হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
উৎসবের এই আমেজ উপজেলা পর্যায়েও ছড়িয়ে পড়ে। শ্রীপুর উপজেলায় বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের উদ্যোগে একটি বিশাল বিজয় র্যালি বের হয়, যা পরে শ্রীপুর মিনি স্টেডিয়ামে পথসভায় মিলিত হয়। মাগুরা জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা এই র্যালিতে নেতৃত্ব দেন।
অন্যদিকে, মহম্মদপুর উপজেলা সদরেও বিজয় র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এখানকার আয়োজনে দলীয় বিভাজনের চিত্রও ছিল স্পষ্ট। উপজেলা বিএনপির দুটি গ্রুপ পৃথকভাবে বিজয় বর্ষপূর্তি পালন করে। একটি গ্রুপ আমিনুর রহমান কলেজ মাঠ থেকে র্যালি বের করে ট্রাফিক চত্বরে সমাবেশ করে, যেখানে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মোঃ আক্তার হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অপর গ্রুপটি বিজয় র্যালি শেষে শহীদ আহাদ চত্বরে সমাবেশ করে, যেখানে উপজেলা বিএনপির সাবেক নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সব মিলিয়ে, মাগুরা জেলাজুড়ে দিনটি পালিত হয়েছে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং আগামী দিনের গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের প্রত্যয়কে সঙ্গী করে।
What's Your Reaction?






