নওগাঁ বিএনপির নেতৃত্বে কারা আসছেন, ৩ পদে লড়ছেন ১৯ প্রার্থী

দীর্ঘ ১৫ বছরের রাজনৈতিক অচলায়তন ভেঙে অবশেষে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্মেলনের পথে হাঁটছে নওগাঁ জেলা বিএনপি। দীর্ঘদিন পর হতে যাওয়া এই সম্মেলনকে ঘিরে পুরো শহর ছেয়ে গেছে পদপ্রত্যাশী নেতাদের ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে। নেতৃত্বে কারা আসছেন, তা নিয়ে তৃণমূল থেকে শুরু করে শহরের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
সোমবার (১১ আগস্ট) নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যাকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ফিরে এসেছে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য। তাদের একটাই চাওয়া—দলের দুর্দিনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তারাই যেন নেতৃত্বে এসে সঠিক মূল্যায়ন পান।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলা বিএনপির সর্বশেষ দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল ২০১০ সালে। এরপর নানা সীমাবদ্ধতায় আর সম্মেলন হয়নি। সর্বশেষ ২০২২ সালে গঠিত আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে চলছিল সাংগঠনিক কার্যক্রম। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার বেশ ঘটা করেই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে পুনরুজ্জীবিত করে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম ও সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করতে পারে, এমন নেতৃত্বই প্রত্যাশা করছেন কর্মীরা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এবারের সম্মেলনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দুটি সাংগঠনিক পদের জন্য মোট ১৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গোপন ব্যালটে জেলার ১৪টি ইউনিটের ১ হাজার ৪১৪ জন কাউন্সিলর তাদের নতুন নেতা নির্বাচন করবেন।
সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আটজন হেভিওয়েট নেতা। তারা হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক সনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু, সাবেক আহ্বায়ক মাস্টার হাফিজুর রহমান, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান তুহিন, পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুস শুকুর, জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ এস এম মামুনুর রহমান এবং জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এ বি এম আমিনুর রহমান।
সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য লড়াই হবে চারজনের মধ্যে। এই প্রার্থীরা হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন, এবং সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল হক বেলাল।
অন্যদিকে, দুটি সাংগঠনিক সম্পাদক পদের জন্য মাঠে নেমেছেন সাতজন প্রার্থী। তারা হলেন শফিউল আজম (ভিপি) রানা, নূর-ই আলম, ফরিদুজ্জামান, খায়রুল আলম, শবনম মোস্তারী, সুলতান মামুনুর রশিদ এবং কামরুজ্জামান কামাল।
প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে প্রত্যেকেই আশাবাদী। সভাপতি প্রার্থী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বলেন, "বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। কাউন্সিলররা ভোটের মাধ্যমে আমাকে বিজয়ী করবেন বলে আমি আশাবাদী।" আরেক সভাপতি প্রার্থী ও সাবেক পৌর মেয়র নজমুল হক সনি বলেন, "সবসময় দলের পাশে ছিলাম। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।"
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মামুনুর রহমান রিপন বলেন, "নেতাকর্মীরা নতুন নেতৃত্ব চান। সেই জায়গা থেকেই আমি প্রার্থী হয়েছি।" আরেক প্রার্থী বায়েজিদ হোসেন বলেন, "সদস্য সচিব হিসেবে দলকে শক্তিশালী করেছি। আমার সাংগঠনিক কার্যক্রম ও ত্যাগ বিবেচনা করে কাউন্সিলররা আমাকেই নির্বাচিত করবেন।"
সম্মেলন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী রেজাউল করিম বাদশা জানান, সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে এবং এর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
What's Your Reaction?






