নদীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো রথযাত্রা ও প্রবারণা উৎসব

বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে উৎসাহ, আনন্দ ও ধর্মীয় উদ্দীপনায় সমৃদ্ধ রথযাত্রা এবং প্রবারণা উৎসব “মহা ওয়াগ্যেয়াই পোয়ে” শেষ হয়েছে রাখইংক্ষ্যং নদীতে রথ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে।
উৎসব উদযাপন কমিটি আয়োজিত চার দিনের এই মহোৎসবের সমাপনী দিনে, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর), বিকাল সাড়ে ৪টায় রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বিহারে সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ধর্মীয় আলোচনা সভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবারণা উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি ও ১ নং রোয়াংছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মেহ্লাঅং মারমা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা ভিক্ষু পরিষদের সভাপতি ও রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উ: পঞ্ঞানন্দ মহাথেরো।
ধর্মীয় আলোচনা শেষে মঙ্গলসূত্রপাঠের মধ্য দিয়ে রথযাত্রা শুরু হয়। রংবেরঙের সজ্জায় স্বর্ণ ময়ূর সাদৃশ্যে সাজানো রথে প্রতিম্বর বসানো হয়। রথের ডান ও বাম দড়ি ধরে যুবক-যুবতী, নারী-পুরুষ, শিশু ও কিশোররা সারিবদ্ধভাবে রথটি টেনে নিয়ে চলেন। পথে পথে ভক্তরা মোমবাতি জ্বালিয়ে মঙ্গলকামনা প্রকাশ করেন। ঢাক-ঢোলের তাল ও নৃত্যের সঙ্গে উৎসব মুখর পরিবেশে রথযাত্রা রোয়াংছড়ি বাজারসহ আশেপাশের এলাকা মুখরিত করে তোলে।
এই রথযাত্রায় শুধুমাত্র বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ নয়, পাহাড়ি বাঙালি ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। ফলে এই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
রথের পরিচ্রমণ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বিহারে সংলগ্ন রাখইংক্ষ্যং নদীর ঘাটে রথটি নদীতে ভাসিয়ে বিসর্জনের মাধ্যমে উৎসব সমাপ্ত হয়। এরপর মারমাদের ঐতিহ্যবাহী জ্যাঁক নৃত্য ও স্থানীয় শিল্পীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করে।
What's Your Reaction?






