কুবি ডিবেটিং সোসাইটির প্রদর্শনী বিতর্ক

কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি (সিওইউডিএস) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা নিয়ে প্রদর্শনী বিতর্ক আয়োজন করে। বিতর্কের মোশন ছিলো “এই সংসদ মনে করে, ছাত্র সংসদ বাস্তবায়ন-ই পারে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করতে।”
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এই প্রদর্শনী বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহবুব দিপু।অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা ও সভাপতিত্বে ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি সাদিয়া আফরিন। বিতর্কের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিওইউডিএস-এর সহ-সভাপতি (বাংলা বিতর্ক) শাকিল আহমেদ সবুজ। এছাড়া মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ তরিকুল ইসলাম।
সরকারি দলে অংশ নেন মোঃ এনায়েত হোসেন, ফারহা খানম ও নাজমুস সাকিব। অন্যদিকে বিরোধী দলে ছিলেন মোঃ লাবিব রহমান, আবসার উদ্দিন ইফতি এবং নাজমুল হাসান ফাহিম।
আলোচনায় সরকারি দল যুক্তি তুলে ধরে যে ছাত্র সংসদ বাস্তবায়ন হলে গণতান্ত্রিক চর্চা বাড়বে, নেতৃত্বে স্বচ্ছতা আসবে এবং বহিরাগত প্রভাবমুক্ত ছাত্ররাজনীতি গড়ে উঠবে। অন্যদিকে বিরোধী দল মনে করে, কেবল ছাত্র সংসদ নির্বাচন করলেই লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ হবে না; বরং সাংগঠনিক সংস্কার ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা অপরিহার্য।
এ ব্যাপারে ডিবেটিং সোসাইটির ইংরেজি বিতর্কের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো:লাবিব রহমান বলেন ' “আজকে আমাদের যে প্রদর্শনী বিতর্কটা হয়েছে, সেটা ছিল, কুকসু বাস্তবায়ন হলে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা যাবে কি যাবে না। কেননা আমরা ইতোমধ্যেই জানি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি একটি রোগের মতো ছিল। তবে জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে আমরা দেখেছি যে এটা কিছুটা হলেও কমেছে।
এছাড়াও তিনি আরও বলেন' “এখন কুকসুর মতো একটি ছাত্র সংগঠন হলে, সেটা আসলে কতটুকু কেন্দ্রীয় অবস্থান নিতে পারবে, সেই অবস্থানের হাত ধরে শিক্ষার্থীদের মতামতের কতটুকু প্রতিফলন ঘটবে এবং এর মাধ্যমে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কিনা, এই বিষয়কে ঘিরেই আজকের প্রদর্শনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি সাদিয়া আফরিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলোর দায়িত্ব কেবল বিনোদনমূলক বা আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয়, বরং শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রয়োজন ও স্বার্থকে তুলে ধরা। নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রমকে সক্রিয় রাখা আমাদেরই দায়বদ্ধতা। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি বরাবরের মতো এবারোও শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে সহযোগী হয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করেছে।”
এছাড়াও তিনি বলেন, “বর্তমানে যখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা তীব্র, তখন শিক্ষার্থীদের ভাবনা, প্রত্যাশা ও উদ্বেগগুলোকে সামনে আনতেই আয়োজন করা হয় আজকের এই প্রদর্শনী বিতর্ক। এই বিতর্কের মঞ্চ আজ কেবল বিতার্কিকদের যুক্তি উপস্থাপনের জায়গাতে ছিল না, বরং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্র সংসদ নিয়ে মনবাঞ্চনার প্রকাশ ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা গঠনের একটি উন্মুক্ত ক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ডিবেটিং সোসাইটির এই আয়োজন সত্যিই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। আশা করি, ডিবেটিং সোসাইটি এ ব্যাপারে ভবিষ্যতেও আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।”
What's Your Reaction?






