নওগাঁয় জেঁকে বসেছে শীত: কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ
উত্তরের জেলা নওগাঁয় পৌষের শুরু থেকেই জেঁকে বসেছে শীত। গত কয়েকদিন ধরেই ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের দাপটে জবুথবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের জনজীবন। দিনের অধিকাংশ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না, ফলে কনকনে ঠান্ডার অনুভূতি বেড়েই চলেছে। আর এই বিরূপ আবহাওয়ায় সবচেয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেখানে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। গত কয়েকদিন ধরে জেলার তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে পুরো জনপদ। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে শহরের মুক্তির মোড়, ব্রিজের মোড় এবং শিবপুর বাইপাস ব্রিজ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কাকডাকা ভোরে কাজের সন্ধানে গ্রাম থেকে ছুটে এসেছেন অসংখ্য দিনমজুর। কোদাল আর মাটি কাটার ঝুঁড়ি নিয়ে বসে থাকা এসব মানুষের চোখেমুখে হতাশার ছাপ। একদিকে হাড়কাঁপানো শীতের কষ্ট, অন্যদিকে কাজ না পাওয়ার আশঙ্কা। অনেককেই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে কাজ না পেয়ে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।
শহরের মুক্তির মোড়ে কাজের আশায় বসে থাকা সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ আবুল কাশেম বলেন, ‘মাঝখানে কিছুদিন শীত একটু কম ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে বাতাস আর ঠান্ডায় টেকা যাচ্ছে না। এই বয়সে শীতে ঘর থেকে বের হওয়া খুব কষ্টের, সর্দি-কাশিতে ভুগছি। কিন্তু আমরা তো দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। পেটের তাগিদে বাধ্য হয়েই বের হয়েছি। কাজ না পেলে না খেয়ে থাকতে হবে।’
ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের কারণে জেলার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে খোলা আকাশের নিচে কাজ করা কৃষি শ্রমিক, রিকশাচালক ও দিনমজুরদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই দুর্ভোগ কমার কোনো লক্ষণ দেখছেন না ভুক্তভোগীরা।
What's Your Reaction?
আব্দুল মজিদ মল্লিক, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁঃ